মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের রশিদপুর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে ফুলহার নদী। প্রতিবছর বর্ষায় নদীর জল বাড়তেই ভয়ঙ্কর ধ্বংসলীলা চালায় নদীটি। তীব্র ভাঙন দেখা যায় নদীর দুই তীরে। বিশেষ করে রশিদপুরে নদী ভাঙনের সমস্যা দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে বারবার রাজনৈতিক নেতারা সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন গ্রামবাসীদের। কিন্তু, সেই আশ্বাস পূরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে এলাকার মানুষদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্য সরকারের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী তথা হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তাজমুল হোসেন।
আরও পড়ুন: নদী ভাঙনে তলিয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প, কেন্দ্রকে তুলোধনা রতুয়ার বিধায়কের
আজ রবিবার রশিদপুর গ্রামে নদী ভাঙন খতিয়ে দেখতে যান মন্ত্রী। তখনই তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বর্ষা শুরু হতেই নদীতে জল বাড়তে শুরু করেছে। এরফলে বেশ কয়েকটি বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। এমন অবস্থায় তারা আতঙ্কে ভুগছেন। এনিয়ে বারবার প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনও লাভ হয়নি। তাই আজ মন্ত্রী এলাকায় যেতেই তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা ভাঙন রোধ সহ পুনর্বাসন এবং একাধিক দাবি জানান মন্ত্রীর কাছে।
ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষজন অভিযোগ করেন, গত বছরও মন্ত্রী এই এলাকায় পরিদর্শনে এসেছিলেন। সেই সময় বন্যা রোধে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু, আজ অবধি সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। এখন আবার ভাঙন শুরু হতেই তিনি এলাকায় এসেছেন। তাদের প্রশ্ন, এখন কীভাবে তিনি এই ভাঙন রোধ করবেন।
স্থানীয়দের দাবি, ওই এলাকায় ইতিমধ্যে একাধিক বাড়ি নদীর তলায় চলে গিয়েছে। ফলে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে বহু পরিবার। এখন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কোথায় থাকবেন তারা? এই প্রশ্ন তুলে মন্ত্রীকে ঘিরে এদিন বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি পুনর্বাসনের দাবি জানান। শেখ ওসমান নামে এক স্থানীয় বাসিন্দার অভিযোগ, প্রতিবার ভোটের সময় নেতা-মন্ত্রীরা আসেন। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। কিন্তু, তারপরে আর তাদের দেখা যায় না। আবার এখন ভাঙান শুরু হয়ে যাওয়ার পর মন্ত্রী এসেছেন। তাঁর কথায়, ‘আমরা আতঙ্কে রাতে ঘুমোতে পারি না।’ তাঁর দাবি, তাঁদের দু কাঠা করে জমি দিতে হবে। যাতে তারা বাকি জীবন নিশ্চিন্তে কাটাতে পারেন
এবিষয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তাজমুল হোসেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর কাঁধেই দায় ঠেলে দিয়েছেন। তিনি জানান, এই কেন্দ্র থেকে জিতেছেন খগেন বাবু। এই বিক্ষোভ তাঁকে ঘিরে দেখানো উচিত। পাল্টা তাজমুলকে কটাক্ষ বিজেপি সাংসদ বলেন, ওই এলাকায় বিদ্যুতের ব্যবস্থা তিনিই করেছেন। ভাঙন রোধের অর্থ চেয়ে রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি করলেই তো সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। জানা যায়, মন্ত্রী তাজমুল হোসেনও ফোনে খগেনের সঙ্গে কথা বলেন। বিজেপি সাংসদ তাঁকেও একই কথা বলেছেন।