কল টিপলেই বের হচ্ছে রক্তের মতো লালচে রঙের জল। আর সেইসঙ্গে বিকট দুর্গন্ধ। সেই জল গায়ে ঠেকলেই ঘটছে ভয়ঙ্কর বিপদ। গায়ে হাতে দানা বাঁধছে চর্মরোগ। এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে হাওড়ার উলুবেরিয়া শিল্পাঞ্চল এলাকায়। ভয়ে কলের জল স্পর্শ করছেন না বাসিন্দারা। বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কী কারণে এমনটা ঘটছে তা নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছেন শিল্পাঞ্চলের পার্শ্ববতী গ্রামের বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন: কল থেকে বেরোচ্ছে নীল রঙের জল, সঙ্গে ফেনা! মেঝেতে পড়লে চকচক করছে টাইলসও- ভিডিয়ো
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, দূষণের কারণেই এমনটা হচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, শিল্পাঞ্চলের পার্শ্ববতী জাতীয় সড়কের ধারে নয়ানজুলি রয়েছে। সেখানে রাতের অন্ধকারে বীরশিবপুর এলাকায় ট্যাঙ্কার থেকে রাসায়নিক মিশ্রিত জল ফেলে দেওয়া হচ্ছে। আর সেই রাসায়নিক মিশ্রিত দূষিত জল উলুবেড়িয়া জোয়ারগোড়ী অঞ্চলের আমড়াবেড়িয়া গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই দূষিত জল শুধু যে কল থেকেই বের হচ্ছে তা নয়, সেই জল চাষের জমি এবং পুকুরের জলেও মিশছে। এরফলে চাষের ক্ষতির পাশাপাশি পুকুরের মাছ নষ্ট হচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে মানুষের। জল গায়ে ঠেকলেই চর্মরোগ হচ্ছে। টিউবওয়েলের জল থেকে বিকট দুর্গন্ধ বের হচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, ইতিমধ্যেই ঘটনাটি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তারপর প্রশাসনের তরফে সেই জল পরীক্ষার জন্য নমুনাও বেশ কয়েকবার সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু, কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফলে চরণ সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয়রা। গ্রামবাসী সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে একটি ট্যাঙ্কার রাসায়নিক মিশ্রিত জল ফেলতে এসেছিল নয়ানজুলিতে। তবে গ্রামবাসীরা সেটি দেখে ফেলায় ট্যাঙ্কারটিকে আটকে দেন। ঘটনাকে কেন্দ্র এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। সেখানে গিয়ে পুলিশ রাসায়নিক মিশ্রিত ট্যাঙ্কারটিকে আটক করে।
এই অভিযোগের কথা স্বীকার করেছেন, স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান শম্পা দাস। তবে তিনি জানান, গ্রামবাসীদের তরফে ঘটনায় কোনও লিখিত অভিযোগ জানানো হয়নি। গ্রামবাসীদের কাছ থেকে তিনি মৌখিক অভিযোগ শুনেছেন যে রাসায়নিক মিশ্রিত জলের ফলে এলাকার ক্ষতি হচ্ছে। এবিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান। যদিও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না সেবিষয়ে তিনি কিছু জানাননি।