নদীর উপর ব্রিজ তৈরির দাবি স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের। আর ব্রিজ না থাকার ফলে দীর্ঘ রাস্তা পেরিয়ে ঘুরতি পথে তাদের যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু, প্রশাসনের কাছে বারবার দ্বারস্থ হওয়া সত্ত্বেও গ্রামবাসীদের যাতায়াতের জন্য নদীর উপরে কোনও ব্রিজ বা সেতু তৈরি করা হয়নি। এই অবস্থায় ব্রিজ তৈরিতে নিজেরাই উদ্যোগ নিলেন গ্রামবাসীরা। কার্যত নদীর গতিপথ আটকেই তৈরি করা হল রাস্তা। ঘটনাটি উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া ব্লকের মাঝিয়ালি গ্রাম পঞ্চায়েতের। এই নদীর নাম হল বেরং নদী। এর গতিপথ আটকে আর্থ মুভার দিয়ে মাটির রাস্তা তৈরি করেছেন স্থানীয়রা। যদিও পুরো ঘটনায় প্রশাসনকে জানানো হয়নি বলেই অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ: হেঁটে পার হওয়া যাবে কি পদ্মা সেতু? যাবে কি সেলফি তোলা? নিয়ম কী কী
স্থানীয়দের অভিযোগ, তারা ছোট থেকেই দেখছেন এখানে যাতায়াতের ব্যবস্থা খুবই খারাপ। নদীর উপরে সেখানে কোনও ব্রিজ বা সেতু না থাকায় তাদের যাতায়াত করতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। ফলে বাজার থেকে শুরু করে স্কুল, কলেজ প্রতিষ্ঠান বা অন্যান্য প্রশাসনিক কাজের জন্য তাদের সমস্যা হয়। এই অবস্থায় তারা দীর্ঘদিন ধরে সেখানে ব্রিজ বানানোর দাবি করে আসছিলেন। কিন্তু, প্রশাসনের তরফ থেকে কোনও সাড়া মেলেনি। তাই নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে নদীর গতিপথ আটকে রাস্তা তৈরি করেছেন। তবে জল যাতে পুরোপুরি না আটকায় তার জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরজন্য ৩ টে হিউম পাইপ দিয়ে জল যাওয়ার রাস্তা করা হয়েছে।
স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান কাইয়ুম আলম জানান, নদী আটকে রাস্তা তৈরির বিষয়টি তিনি জানেন না। এ বিষয়ে প্রশাসনকে জানানো হয়নি। প্রশাসনের তরফেও কাউকে কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে বলে পঞ্চায়েত প্রধান জানিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা আশেপাশে সেতু না থাকায় দুর্ভোগে পড়েন। তাদের অনেক দূর যাতায়াত করতে হয়। এর জন্য অনেক সময় লেগে যায়। সেই কারণেই তারা নিজেরা চাঁদা তুলে নদীর উপরে মাটির রাস্তা করেছেন। এর ফলে তাদের দুর্ভোগ কমবে।
যদিও স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কণিকা ভৌমিক জানান, ওই জামির আশেপাশে নদীর ওপর দুটি ব্রিজ রয়েছে। হয়তো গ্রামবাসীরা সময় বাঁচাতেই মাটি দিয়ে রাস্তা তৈরি করেছেন। তবে স্থানীয়দের দাবি, ওই গ্রাম থেকে নদীর ওপরে যে সেতু দুটি রয়েছে সেগুলি অনেক দূরে অবস্থিত। এরমধ্যে একটি সেতু রয়েছে গ্রাম থেকে সাত কিলোমিটার দূরে অন্য সেতুটি রয়েছে ৫ কিলোমিটার দূরে। ফলে এই দূরত্ব অতিক্রম করতে তাদের অনেক সময় লেগে যায়। এখন তারা নিজেরা রাস্তা তৈরি করে ফেলার সেই সময় আর লাগবে না। কয়েক হাজার মানুষের সুবিধা হবে এর ফলে।