ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে গত দুদিন ধরে বৃষ্টিপাত হয়েছে বাংলায়। তার জেরে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন গ্রাম বাংলার বহু মানুষ। পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরির প্রত্যন্ত এলাকার মানুষজনও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। আর দুর্যোগ কাটতেই সেখানে দুর্গতদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বিজেপি বিধায়ক। অভিযোগ, দুর্যোগ চলাকালীন তিনি দুর্গতদের সঙ্গে দেখা করেননি। দুর্যোগ কাটতে শনিবার তিনি গিয়েছেন নিছক প্রচারের জন্যই। এই অভিযোগকে ঘিরে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শেষ পর্যন্ত এলাকা ছেড়ে চলে যান বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক। তবে এই ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই দাবি করেছেন বিধায়ক।
আরও পড়ুন: দানার সুযোগ নিয়ে ‘বর্ডার থেকে যেন দুষ্টু লোকের আমদানি না হয়', সতর্ক করলেন মমতা
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে ব্যাপক বৃষ্টির ফলে খেজুরির বারাতলা অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এর জেরে এলাকায় বহু মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ৩৫ থেকে ৪০টি পরিবার পরিবারের ১৫০টি মানুষ বারাতলার অন্তর্গত আমড়াতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেন। তবে জানা যায়, তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য গৌরিশঙ্কর দাসের নেতৃত্বে এই শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, দুর্যোগে প্রথম থেকেই বিধায়কের অনুভূগামী বা বিজেপির কোনও সদস্যদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে সেখানে দেখা যায়নি।
এরপর দুর্যোগ কাটতে শনিবার সন্ধ্যে নাগাদ ওই ত্রাণ শিবির পরিদর্শনে যান বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক। তাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। তিনি ত্রাণ শিবির থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পথেই গ্রামবাসীরা ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান। গৌরি শঙ্করের নেতৃত্বে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরাও বিক্ষোভে সামিল হন। যদিও বিজেপি বিধায়ক জানান, তিনি দলের কর্মীদের সাহায্য করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন তবে তারা সেখানে কেন আসেননি সে বিষয়টি তিনি জানেন না। তারপরেই গ্রামবাসীদের ক্ষোভ চরমে ওঠে। তবে কোনওভাবে এলাকা ছেড়ে চলে যান বিধায়ক।
এবিষয়ে বিজেপি বিধায়ক জানান, ‘সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমার ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এখানে সর্বদা জঙ্গলের রাজত্ব চলে। আমরা শীঘ্রই এর প্রতিবাদ জানাব।’ অন্যদিকে, গৌরি শঙ্কর জানান, দুর্যোগের সময় বিজেপির কাউকে দেখা যায়নি বলেই মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয়েছে। মোট কথা, দানা নিয়েও রাজনৈতিক আকচাআকচি যে চলছে, এই ঘটনা সেটাই দেখিয়ে দিল চোখে আঙুল দিয়ে।