জমি কার? এই বিবাদকে কেন্দ্র করে অমর্ত্য সেন বনাম বিশ্বভারতীর লড়াই বেনজির পরিস্থিতির তৈরি করেছে। এই জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে বিশ্বভারতী শুনানির দিন ধার্য করে। কিন্তু সেখানে উপস্থিত থাকতে পারেননি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তবে সেটা চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছিল। তবে শুনানিতে অনুপস্থিত থাকায় অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে এবার ‘কড়া পদক্ষেপ’ করতে চলেছেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আগামী ১৯ তারিখ ১৯৭১ সালের দখলদার উচ্ছেদ আইন অনুযায়ী ‘কড়া পদক্ষেপ’ করা হবে। আর সে কথা অমর্ত্য সেনের আইনজীবীকে ইমেলে নোটিশ পাঠিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন বিশ্বভারতীর রেজিস্ট্রার।
নোটিশের বিষয়টি ঠিক কী? বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের পক্ষ থেকে একটি নোটিশ জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জারি করা সেই নোটিশ অমর্ত্য সেনের আইনজীবী গোরাচাঁদ চক্রবর্তীকে ইমেল করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট নোটিশে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ১৯৭১ সালের দখলদার উচ্ছেদ আইন অনুযায়ী আগামী ১৯ এপ্রিল কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অর্থাৎ ওই জমি থেকে উচ্ছেদ করে দখল নেওয়া হবে। তাছাড়া ২৯ মার্চ অমর্ত্য সেনকে শুনানির জন্য বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ডেকে ছিলেন। কিন্তু তখন তিনি সময় চেয়েছিলেন। আইন অনুযায়ী একসপ্তাহের বেশি সময় দেওয়া যায় না। তাই আগামী ১৯ এপ্রিল ‘কড়া সিদ্ধান্ত’ নেওয়া হবে।
আর কী জানা যাচ্ছে? অমর্ত্য সেনের আইনজীবী এই নোটিশের প্রেক্ষিতে জবাব দিতে পারবেন। আবার এই ঘটনা যদি ঘটে তাহলে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অমর্ত্য সেনের দাবি, এই জমি তাঁর বাবা কিনেছিলেন। বিশ্বভারতী তা মানতে নারাজ। আর অমর্ত্য সেন বিদেশে থাকায় এখন আসতে পারবেন না। তাই জমি সংক্রান্ত কাগজপত্র তাঁর কাছে নেই। এই কথা বিশ্বভারতীকে জানিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর আইনজীবী। এমনকী চিঠি দিয়ে ৪ মাস সময়ও চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিশ্বভারতী তাতে রাজি হয়নি।
বিবাদ ঠিক কী নিয়ে? বৃহস্পতিবারের এই নোটিশ প্রকাশ্যে চলে আসায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিশ্বভারতীর দাবি, অমর্ত্য সেনের লিজ নেওয়া জমির পরিমাণ ১.৩৮ একর নয়। সেটা আসলে ১.২৫ একর। সুতরাং তিনি ১৩ শতক জমি জোর করে দখল করেছেন এবং তা ভোগ করছেন। ওই জমি আসলে বিশ্বভারতীর সম্পত্তি। অমর্ত্য সেন এই দাবি মানতে নারাজ। কারণ তাঁর কাছে নথি রয়েছে এই জমি তাঁর বাবার কেনা। সেটা জোর করে হাতিয়ে নিতে চাইছে বিশ্বভারতী। এই পরিস্থিতিতে আবার বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি দিলীপ ঘোষ সরাসরি অমর্ত্য সেনকে ওই জমি ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। সব মিলিয়ে বিতর্ক এখন তুঙ্গে।