বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন ডঃ সঞ্জয় মল্লিক। তিনি কলাভবনের অধ্যক্ষ পদে রয়েছেন। কারণ আজ, বুধবার মেয়াদ শেষ হয়ে গেল বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। বিদ্যুতে চক্রবর্তীর মেয়াদ শেষে বিশ্বভারতী অ্যাক্ট অনুযায়ী, সবচেয়ে প্রবীণ অধ্যাপক হিসাবে উপাচার্যের ভার নিলেন ডঃ সঞ্জয় মল্লিক। আজ বাসভবন ‘পূর্বিতা’ থেকে দুপুরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে সরকারি কাগজে সই করেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তবে তাঁর মেয়াদ ফুরোলেও ফলক–বিতর্ক কিন্তু রয়েই গেল। যা বয়ে নিয়ে যেতে হল প্রাক্তন উপাচার্যকে।
এদিকে ফলক বিতর্ক নিয়েই বুধবার মেয়াদ শেষ হল বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। উপাচার্য হিসেবে তাঁর মেয়াদকালে বারবার বিশ্বভারতী নিয়ে নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর একাধিক সিদ্ধান্তে কেন্দ্র–রাজ্য সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরেও বারবার অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল। তবে আবার তাঁকে পদে রাখা হবে কিনা তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এদিন নতুন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হলেন কলাভবনের অধ্যক্ষ ড. সঞ্জয় মল্লিক। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই উচ্ছ্বসিত পড়ুয়া, অধ্যাপক এবং কর্মীদের একাংশ। কারণ তিনি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পরাজয় নিয়ে সেমিনার, অমর্ত্য সেনকে কটাক্ষ, মুখ্যমন্ত্রীকে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় আক্রমণ, শিক্ষক–অধ্যাপক এবং আশ্রমিকদের নানা সময়ে খারাপ কথা বলেছেন।
অন্যদিকে বিশ্বভারতী উপাসনা গৃহ, ছাতিমতলা এবং রবীন্দ্রভবনের উত্তরায়ণের সামনে শ্বেতপাথরের ফলক বসিয়েছে। তাতে লেখা হয়েছে, ‘ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’। তার ঠিক নীচে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম রয়েছে। অথচ তাতে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামের উল্লেখ নেই। এই ফলক বিতর্কে সরব হয় তৃণমূল কংগ্রেস। বিশ্বভারতীর নতুন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয় কুমার মল্লিক বিশ্বভারতীর কর্মসমিতির সদস্যও। তাঁকে পেয়ে সকলে খুশি। আর যাওয়ার দিনও ভয় পেলেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তাই কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্য দিয়েই ছাড়লেন বিশ্বভারতীর পথ।
আরও পড়ুন: ‘বালুকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে’, রথীন ঘোষকে বাড়তি দায়িত্ব দিয়ে মন্তব্য মমতার
আর তাঁর এই চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নানা মজাদার পোস্ট শুরু হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখানে লেখা হচ্ছে, ‘লোডশেডিং হলে বিদ্যুৎ চলে গেলে বাঙালি এত খুশি আগে কখনও হয়নি।’ এই সব নানা কথা লেখা হওয়ার পর বিশ্বভারতী প্রাঙ্গণে চলে দেদার মিষ্টি মুখের পালা। মিষ্টি মুখ করেন বিদ্যুৎ বিরোধী হিসাবে পরিচিত অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য এবং অধ্যাপক সংগঠনের সদস্যরা। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বিশ্বভারতীরই প্রাক্তনী। তাঁর গবেষণা আধুনিক ভারতীয় চিত্রকলা এবং চল্লিশের দশকের বাংলা নিয়ে। ‘মিনিয়েচার পেন্টিং’ নিয়েও গবেষণা রয়েছে তাঁর। একাধিক গবেষণাপত্র এবং বেশ কয়েকটি বইয়ের লেখক সঞ্জয় কুমার মল্লিক। ১৭ বছরের বেশি সময়ে বিশ্বভারতীতে শিক্ষকতা করছেন। তিনি জেএনইউ–তেও পড়িয়েছেন।