গঙ্গাসাগর মেলা শেষ। তবে সেখানে যে পরিমাণ বর্জ্য পদার্থ পড়ে রয়েছে তা গত বছরের বর্জ্য পদার্থকে ছাপিয়ে যাবে বলে মনে করছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসন। যদিও রাজ্য সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছিল এ বছর গঙ্গাসাগর মেলায় গত বছরের তুলনায় মাত্র ২৫ শতাংশ ভিড় হয়েছে। কিন্তু, যেভাবে বর্জ্য পদার্থের পাহাড় জমতে শুরু করেছে তাতে গঙ্গাসাগর মেলায় ভিড় গত বছরের তুলনায় বেশি হয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
এই অবস্থায় করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে। এই অবস্থায় বর্জ্য পদার্থ জমে থাকায় পরিবেশ দূষণের সম্ভাবনা থাকছে। সেই কারণে বর্জ্য পদার্থগুলি পুনর্ব্যবহারের জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে জেলা প্রশাসন। এর জন্য বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলে বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে যুক্ত এক সংস্থার আধিকারিক প্রসূনকান্তি দাস জানিয়েছেন।
তিনি জানান, এই সংস্থা কুম্ভমেলায় বর্জ্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। এই কাজে যুক্ত আরও একটি সংস্থার আধিকারিক সঙ্ঘমিত্রা মুখোপাধায় বলেন, যেগুলো ব্যবহার যোগ্য প্লাস্টিক সেগুলো বাছাই করে পুনর্ব্যবহারের জন্য রাউরকেল্লা সিমেন্ট কারখানায় পাঠানো হবে।
যদিও যে বর্জ্য পদার্থগুলি পড়ে রয়েছে তার মধ্যে বেশিরভাগই পুনর্ব্যবহারযোগ্য নয়। এই কারণে পরিবেশ দূষণের আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদরা। এই সমস্ত বর্জ্য পদার্থের মধ্যে সিংহভাগই রয়েছে প্লাস্টিক, থার্মোকলের মত পুনর্ব্যবহারের অযোগ্য পদার্থ।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত বছর গঙ্গাসাগরে মেলার পর বর্জ্য পদার্থ জমে ছিল ১৬৭ মেট্রিক টন। তবে এই বছর সেই সংখ্যাটা ছাপিয়ে এখনও পর্যন্ত হয়েছে ১৬৯.১৭২ মেট্রিক টন। যার এক-চতুর্থাংশ প্লাস্টিক, থার্মোকলের মতো পুনর্ব্যবহারের অযোগ্য বর্জ্য পদার্থ রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এখনও গঙ্গাসাগর মেলায় সব বর্জ্য পদার্থ জমা করা সম্ভব হয়নি। ফলে সবমিলিয়ে বর্জ্য পদার্থ প্রায় ২০০ মেট্রিক টনের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই অবস্থায় পরিবেশ দূষণ রুখতে উদ্যোগী হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন।
যদিও যেভাবে বর্জ্য পদার্থ জমে রয়েছে তাতে পূণ্যার্থীদের ভিড় বেশি হয়েছে বলে মনে করা হলেও তা অবশ্য মানতে চাননি গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদের কার্যনির্বাহী আধিকারিক শম্ভুদীপ সরকার। তিনি মনে করেন, 'এ বছর বর্জ্য পদার্থ সংগ্রহের কাজ ভালো হয়েছে। তাই গত বছরের তুলনায় বেশি বর্জ্য পদার্থ জমে আছে।'