মঙ্গলবার মালদার ইংরেজবাজারে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে সেটা শুধু বিডিও’দের জন্য নয়। সরকারি কর্মীদেরও একই বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর আরজি কর হাসপাতালের কাণ্ডে সোমবার সঞ্জয় রায়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে শিয়ালদা আদালত। তাতে যে তিনি সন্তুষ্ট নন সে কথা আগেই জানিয়েছিলেন। তাই এখন কলকাতা হাইকোর্টে সঞ্জয়ের ফাঁসির সাজার জন্য রাজ্য সরকার মামলা করেছে। আজ, মঙ্গলবার মালদার সভা থেকে এই প্রসঙ্গে বড় প্রশ্ন তুলে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই মামলার রায় নিয়ে বিচারকের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে এই রায় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অবশ্যই আজও নিজের ক্ষোভ উগরে দিলেন। মুখ্যমন্ত্রী আজ, মঙ্গলবার সভা থেকে বলেন, ‘আরজি কর মামলায় আমরা ফাঁসি চেয়েছিলাম। যাবজ্জীবনে দু’তিন বছর পরই বেরিয়ে যায়। যাবজ্জীবন কেসে প্যারোলে বেরিয়ে যায়। নিজে আইনজীবী ছিলাম। আমি আইন পড়েছি। আইন আমি একটু একটু হলেও বুঝি। এটা বিরলের মধ্যে বিরলতম অপরাধ নয়? আমি মনে করি এটা বিরল, স্পর্শকাতর, জঘন্য অপরাধ। অপরাধ করে বেঁচে গেলে আবার অপরাধ করবে। যাবজ্জীবন মানে কী? অনেকে তো প্যারোলে বেরিয়ে যায়। অন্যায়কে ক্ষমা করে দেব?’
আরও পড়ুন: ‘গ্রামের গরিব মানুষের বাড়িতে যান’, সরকারি কাজে স্বচ্ছতা আনতে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
একইসঙ্গে ধর্ষণের মতো খারাপ ঘটনা ঠেকাতে বাংলার সরকার ‘অপরাজিতা বিল’ নিয়ে এসেছে। সেটা বিধানসভায় পাশ করিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে। এই আটকে রাখা বিলের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনাও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘ধর্ষণ ঠেকাতে রাজ্যের এই বিল দেশে মডেল হওয়া উচিত। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য কেন্দ্রীয় সরকার এখনও এই বিলটাকে আটকে রেখেছে। কেউ দানবিক, পাশবিক হলে সমাজ কি মানবিক হতে পারে? কেউ যেন আমরা দাঙ্গা না করি। যারা দাঙ্গা বাঁধায় তাদের সমর্থন করি না।’
এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, কিছু ক্ষেত্রে তো অপরাধীদের কঠোর সাজা দিতেই হবে। সেটা না হলে তো অপরাধ করার প্রবণতা ঠেকানো যাবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘আরজি কর নিয়ে আদালতের রায়ে আমি শকড। কী করে বলে এটা রেয়ার কেস নয়? এটা তো সিরিয়াস ক্রাইম। কুমারগঞ্জে যখন পার্থ সিংহবর্মণের উপর গুলি চলেছিল তখন আমি ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের ছাড়িয়ে এনেছিলাম। মনে রাখবেন, টাকার জন্য নয়। মানুষের ন্যায় বিচারের জন্য বহু কেস লড়েছি।’