রাত পোহালেই শুরু হচ্ছে গঙ্গাসাগর মেলা। গঙ্গাসাগর মেলায় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকে নজর দিতে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুণ্যার্থীরা বাবুঘাট, আট নম্বর লট এবং কচুবেড়িয়া হয়ে গঙ্গাসাগরে পৌঁছে থাকেন। আজ মঙ্গলবার গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষ্যে তিনটি বই প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মেলার অ্যারেঞ্জমেন্ট বুকলেট, সাগর সংবাদ এবং পর্যটন তথ্য সম্বলিত পত্রিকা সুন্দরী দক্ষিণী। এই বইগুলি হাতে পৌঁছতেই অবাক হয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। আর তারপরই প্রশ্ন করেন এই জেলার জেলাশাসককে। তাতেই চাপে পড়ে যান তিনি।
এদিকে ওই বইগুলি ভাল করে দু’বার–তিনবার করে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। তখন কৌতূহলী সবাই মুখ্যমন্ত্রী কী বলবেন তা নিয়ে। এটা উপস্থিত সরকারি অফিসাররা দেখতে পান। মুখ্যমন্ত্রী কী যেন খুঁজছেন। তারপরই ওই বইগুলি মুখ্যমন্ত্রী দেখেই ভ্রু কুঁচকে দেখেন। বইগুলি দেখে প্রশ্ন করেন, ‘এটা তো ইংরেজি। বাংলা কোথায়?’ জবাবে জেলাশাসক বললেন, ‘সেটা করা হয়নি।’ মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা প্রশ্ন, ‘থাকো বাংলায়, বাংলায় না করলে হয়?’ এই প্রশ্ন শুনে আর কোনও উত্তর দিতে পারেননি। বরং মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, বইগুলি বাংলাতেও ছাপা হবে। আর তারপর তা সকলকে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: জুনিয়র ডাক্তারকে ‘ধর্ষণ’ সরকারি মেডিক্যাল কলেজে, মধ্যপ্রদেশে গ্রেফতার অভিযুক্ত চিকিৎসক
অন্যদিকে আজ গঙ্গাসাগর থেকে ১৬১ কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাগর ব্লকে মোট ১৭টি অঙ্গনওয়াড়ি থেকে একাধিক রাস্তার উদ্বোধন হয়েছে। আর উদ্বোধন করা হয়েছে গোসাবা, নামখানা, পাথরপ্রতিমা ব্লকে ১২টি জেটি, চালতাদুনিয়া, পাখিরালয়ের মধ্যে চারটি ভেসেল চালু করা হয়েছে। আবার একাধিক জেটি, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, গড়ে তোলার কাজ হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ জানান, মেলার সময় পর্যাপ্ত চিকিৎসক, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স এবং প্যারামেডিক্যাল কর্মীর ব্যবস্থা থাকবে। বাংলা, হিন্দি, ওড়িয়া, ইংরেজি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি ভাষায় ঘোষণার ব্যবস্থাও থাকবে এই মেলা প্রাঙ্গণে।
আরও পড়ুন: মন্ত্রী–বিধায়কদের রাখা হয়েছে নদীঘাটে, কে–কোথায় থাকবেন? দায়িত্ব দিলেন মমতা
এছাড়া চার নদীঘাটের দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাবুঘাটের দায়িত্বে থাকবেন দেবাশিস কুমার, অতীন ঘোষ। কচুবেড়িয়াতে থাকবেন সুজিত বসু, মানস ভুঁইয়া, মণীশ গুপ্ত, গিয়াসউদ্দিন মোল্লা। লট এইট নদীঘাটের দায়িত্বে থাকছেন ফিরহাদ হাকিম, দিলীপ মণ্ডল, মন্টুরাম পাখিরা, নীলিমা মিস্ত্রি, যোগরঞ্জন হালদার এবং বাপি হালদার। আর মেলা প্রাঙ্গণের ঘাটের দায়িত্বে থাকছেন অরূপ বিশ্বাস, পুলক রায়, বঙ্কিম হাজরা, স্নেহাশিস চক্রবর্তী এবং শুভাশিস চক্রবর্তী। একইসঙ্গে কয়েকজন সচিবও সেখানে থাকবেন। মুখ্যমন্ত্রী কথায়, ‘দেখে নিতে হবে কেউ যেন কোনওরকম ক্ষতি করতে না পারে। আমি কোস্ট গার্ড, নেভিকে বলেছি, যাতে ওদিক থেকে এদিকেও কোনও অসুবিধা না হয়। জলও খেয়াল রাখতে হবে। জল, স্থল, আকাশ সবটাই খেয়াল রাখতে হবে।’