কালচিনির সুভাষিনী চা–বাগানে মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান হল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভায় নানা বিষয় উঠে এল। আজ বন্ধ চা–বাগান খোলা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে কাঠগড়ায় তুললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, বৃহস্পতিবার কালচিনির সুভাষিনী চা–বাগানে সরকারি পরিষেবা প্রদান এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সরকারের অবহেলাতেই থমকে গিয়েছে উত্তরবঙ্গের সামগ্রিক উন্নয়ন। তাঁর সরকারের আমলে উত্তরবঙ্গের জন্য কোন খাতে কত টাকা বরাদ্দ করেছে, তার বিস্তারিত পরিসংখ্যানের তথ্য তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে এদিন কালচিনির সভায় এসে হাসিমুখে সৌজন্য বিনিময় করলেন জন বারলা। মুখ্যমন্ত্রীও পাল্টা সৌজন্য দেখান। তবে জন বারলার আজকের এই ঘটনায় চাপ বাড়ল বিজেপির। তবে বন্ধ চা–বাগান খোলা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নয়নই আমাদের সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার। আর মনে রাখবেন, উত্তরবঙ্গে যে ৫৯টা চা–বাগান খোলা হয়েছে, সেটাও আমরাই খুলেছি। কেন্দ্র একটাও বন্ধ চা–বাগান খোলেনি।’ ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি চা–বাগান খোলা হয়েছে। উৎসবের আগেও চা–বাগান খোলা হয়েছিল এবং বোনাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ‘উনি চক্রান্তের শিকার হয়েছিলেন’, নেতাজির গোপন ফাইল প্রকাশ্যে আনতে কেন্দ্রকে চাপ মমতার
অন্যদিকে কালচিনির সুভাষিনী চা–বাগানে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। তারপর সোজা চলে যায় মঞ্চে। সেখানে কথা বলেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল–সহ দলের অন্যান্যদের সঙ্গে। আর এখানেই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘বক্সা টাইগার রিজার্ভ নিয়ে গ্রিন ট্রাইবুনালের যে সমস্যা আছে সেটা দেখে নেব। জয়গাঁতে কয়েকজন মহিলা আমাকে জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে বস্তি উচ্ছেদের নোটিশ গিয়েছে। আমরা কাউকে উচ্ছেদ করব না। জেলাশাসক, এসপিকে বললাম এটা আমাদের কাজ নয়। আমরা অন্য রাস্তা দেখব। ৫৯টি চা–বাগান খুলেছি উত্তরবঙ্গে। চা–বাগানের মানুষদের পাট্টা এবং বাড়ি দুটোই দেওয়া হবে।’
এছাড়া আজ কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে রাজ্য ১ লক্ষ ৬৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি কাজ করেছে রাজ্য সরকার। ১০০ দিনের কাজ এবং আবাসে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা থাকা সত্ত্বেও উত্তরবঙ্গেও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বাংলার বাড়ি দেওয়া হচ্ছে। মানুষের কাজের জন্য চালু করা হয়েছে কর্মশ্রী প্রকল্পও। পর্যটনের বিকাশ থেকে শিক্ষার উন্নয়নে একাধিক কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ, পানীয় জলের প্রকল্প করা হয়েছে। আদিবাসীদের জমি কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ৫০টি শয্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ১২ লক্ষ মানুষকে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা দেওয়া হয়েছে। অনেক চা–বাগান খুলে গিয়েছে। আগামী দিনে আরও খুলবে।’