আজ, মঙ্গলবার নৈহাটিতে বড়মার মন্দিরে পুজো দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার নৈহাটি উপনির্বাচনে বড় জয় ছিনিয়ে এনেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তার পর এই নৈহাটি সফর নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। এই মন্দিরে পুজো দিয়ে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর এই এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী পাঁচ বছর আগের স্মৃতিকথা স্মরণ করিয়ে দিলেন তিনি। কেমন করে তিনি নিজে এখানে পার্টি অফিসে বসে নৈহাটিবাসীকে অভয়বাণী দিয়েছিলেন শোনান সেই কথাও। তখনই একগুচ্ছ ঘোষণার সঙ্গে খোঁচা দিয়ে দেন। যা বিজেপির দিকে গিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার মন্দির থেকে বড়মার পুজো দিয়ে বেরিয়ে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, নৈহাটিতে বড়মার মন্দিরের ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে পুলিশ ফাঁড়ি হবে। তার সামনে দিয়ে যে ফেরিঘাট ব্যবহার করেন মানুষজন সেটার সংস্কার করা হবে। বড়মার নামেই গড়ে তোলা হবে ওই ফেরিঘাট। তারপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে শোনা গেল, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময়ের কথা। নৈহাটির পার্টি অফিস রং করেছিলেন তিনি। নৈহাটি ফেরিঘাটের জন্য সাংসদ তহবিলের টাকায় ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে সেজে উঠবে নৈহাটির ঘাটও। বসানো হবে হাইমাস্ক আলো।
আরও পড়ুন: রাজ্যসভার ৬টি আসনে নির্বাচন ডিসেম্বর মাসে, জারি হয়েছে বিজ্ঞপ্তি, তৃণমূল প্রার্থী কে?
এই ২০১৯ সালের কথা বলে আসনে অর্জুন সিংকে খোঁচা দেন মুখ্যমন্ত্রী বলে মনে করা হচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনের আবহে নৈহাটি–ভাটপাড়া–কাঁচড়াপাড়া–কল্যাণী তেতে ওঠে। তখন অর্জুন সিং সদ্য বিজেপিতে গিয়েছেন। বিজেপির টিকিটে জিতে সাংসদ হন ব্যারাকপুরের। বাংলার ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ১৮টিতে বিজেপির সাংসদ। রোজ সরকার ফেলে দেওয়ার হুমকি আসত। নৈহাটিতে একের পর এক পার্টি অফিস দখল করে নিচ্ছিল বিজেপি বলে অভিযোগ। তাদের অত্যাচারে ঘর ছাড়তে হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী–সমর্থকদের। তখন নৈহাটি পুরসভার সামনে ধরনায় বসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ বড়মাকে শাড়ি, ফুল, নাড়ু দিয়ে পুজো দেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি ঘণ্টা বাজিয়ে মঙ্গলারতি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর পুজো শেষ করে সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমার গোত্র হল মা–মাটি–মানুষ। এখানে বলে নয়, আমি সব জায়গাতেই এই গোত্রে পুজো দিই। ব্যারাকপুরে আপনারা পার্থকে জিতিয়েছেন। ও এমপি ল্যাড থেকে দুটি হাসপাতালের ওপিডির জন্য ২ কোটি করে মোট ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। পাঁচ বছর আগে একটা গোলমাল হয়। মানুষের উপর অত্যাচার হয়। আতঙ্কে কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছিলেন না। তখন দু’ঘণ্টা থেকে পার্টি অফিসগুলি রঙ করে দিয়েছিলাম। পার্টি অফিস রঙ করা উদ্দেশ্য ছিল না, উদ্দেশ্য ছিল মানুষের সাহস জোগান। শান্তি ফেরাতে তারপর নৈহাটিতে দু’বার এসেছিলাম। সেদিন আমাকে অনেক অকথা কুকথা শুনতে হয়েছিল।’