আলিপুরদুয়ারে বন দফতরের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, বুধবার এখানে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। আর সেখান থেকেই ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। বক্সার জঙ্গলে একটি নোটিশ পড়েছে। সেটা সামনে আসতেই চর্চা শুরু হয়। মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়, ওই নোটিশ বন দফতর দিয়েছে। আর বন দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই নোটিশ বায়ুসেনা দিয়েছে। এই সব কথা শুনে রেগে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমন নোটিশ দেওয়া যে ঠিক নয় সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর ক্ষোভ উগরে দেন বিষয়টি নিয়ে।
এদিকে অবিলম্বে ওই নোটিশ সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই নোটিশে লেখা আছে, ‘অনুপ্রবেশকারীদের গুলি করা হবে’। বক্সার জঙ্গলে এই নোটিশ দিয়েছে বায়ুসেনা বলে অভিযোগ। আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক সভা থেকে সেটা নিয়েই ফুঁসে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘এয়ারফোর্স কেমন করে এমন নোটিশ দিতে পারে? আনহেলদি লাইন। আর কে বাড়িতে হোম স্টে করবে, সেটা তার সিদ্ধান্ত। এখানে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের কোনও আপত্তি থাকতে পারে না। আপনারা কি নিজেদের ভগবান মনে করেন? এগুলি হয় কী করে?’
আরও পড়ুন: সোদপুরে আত্মঘাতী অশীতিপর বৃদ্ধ, অত্যাচারের অভিযোগ ছেলে–বৌমার বিরুদ্ধে
অন্যদিকে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়, আলিপুরদুয়ারের যে গেস্ট হাউসে মুখ্যমন্ত্রী এবার উঠেছেন, তার দেওয়ালে বন দফতরের একটি সতর্কতার পোস্টার থেকে। যেখানে লেখা, ‘পাচারকারীদের গুলি করে মারা হবে’। এদিন প্রশাসনিক বৈঠকে সেই প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হনুমানগুলিকে থ্যাঙ্কস, ভাগ্যিস ওরা ছিঁড়ে দিয়েছিল! বন দফতরের পোস্টারে লেখা–পাচারকারীদের গুলি করে মারা হবে। এটা কোনও ল্যাঙ্গোয়েজ হল? আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এটা লেখা হল না কেন?’ তখনই সামনে আনা হয় বায়ুসেনার কথা।
এছাড়া এদিন এয়ারফোর্সকে রীতিমতো কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজের মোবাইলে তোলা ছবি দেখান মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষুব্ধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যসচিবের উদ্দেশে বলেন, ‘কে আছেন ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের? মনোজ লিসেন টু মি ভেরি কেয়ারফুলি। আমি যেখানে আছি সেখান থেকে এই ছবি তুলে আনলাম। বনদফতর, ডিএম, এসপি কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা না করে এয়ারফোর্স কীভাবে আমাদের জায়গায় এমন নোটিশ দিতে পারে? এরকম নোটিশ দেওয়া যায় কি? যদি পরিকল্পনা করে কেউ এই কাজ করে থাকে, তাহলে এমন ভাবার কারণ নেই যে আমরা ছেড়ে দেব। অনেকে জানে না, ভুল করে ফরেস্টের রাস্তা দিয়ে ঢুকে পড়েন। তাঁদের ওপর অত্যাচার করা হয়। এটা কেন হবে? মনে রাখবেন বন, অরণ্য, জঙ্গলের প্রতি মানুষেরও অধিকার আছে।’