এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে জোর ধাক্কা দিয়ে ভাল ফল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। শুধু তাই নয়, ঘাসফুল ঝড়ে পদ্মফুলের দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হেরে গিয়েছে বঙ্গে। এমনকী উত্তরবঙ্গে বিজেপির শক্ত ঘাঁটি কোচবিহারে পদ্ম উপড়ে ঘাসফুল গেঁথে দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। নিশীথ প্রামাণিক কোচবিহার কেন্দ্র থেকে হেরে গিয়েছে তৃণমূল প্রার্থী জগদীশ বর্মা বসুনিয়ার কাছে। তাই নির্বাচন মিটে যাওয়ার পরে উত্তরবঙ্গে পা রেখে প্রথমেই কোচবিহারে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ, মঙ্গলবার সকালে মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এই পুজো দেওয়ার আগে কোচবিহার জেলা নেতৃত্বের কয়েকজনকে ডেকে নেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তারপর বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের সঙ্গে। রুদ্ধদ্বার সেই বৈঠকে জেলা নেতৃত্বকে তৃণমূল নেত্রী সতর্ক করে দেন বলে সূত্রের খবর। এদিন উদয়ন গুহ, রবীন্দ্রনাথ ঘোষদের দলনেত্রী স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দেন, ফলাফল ভাল হয়েছে তার জন্য অবশ্যই অভিনন্দন। কিন্তু এই ফলাফল দেখে আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না। বরং আরও বেশি করে কাজ করতে হবে। নিজেদের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব থাকলে তা মিটিয়ে নিয়ে বেশি করে কাজ করতে হবে। সামনে আসছে বিধানসভা নির্বাচন। তাতেও যেন এমন ভাল ফলাফলই হয়।
এদিনের কোচবিহার সফর বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ আজ মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত মহারাজের বাড়ি যান। সেখানে গিয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন। কোচবিহারে আগে দলের মধ্যে নানা সমস্যা ছিল। তাই জেলা নেতৃত্বে রদবদল করা হয়। আগে নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন রবীন্দ্রনাথ–পার্থপ্রতিম গোষ্ঠী, উদয়নের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ গোষ্ঠী। এসব ভাল করে জানেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা নির্বাচনের আগে দ্বন্দ্ব ভুলে একসঙ্গে কাজ করার কথা বলেছিলেন অভিষেক। সেটা হতেই আসনটি হাতে আসে। উত্তরবঙ্গে প্রথমবার জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: প্রার্থী নিয়ে বিদ্রোহ চরমে বঙ্গ–বিজেপিতে, বাগদায় ভেঙে গেল মণ্ডল কমিটি, পদত্যাগ দু’জনের
তবে এই জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। আর আত্মতুষ্টি যেন না আসে সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেছেন বলে সূত্রের খবর। একসঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে আরও মনোযোগী হতে হবে সকলকে। আজ সকালে সার্কিট হাউসে উদয়ন গুহ, পার্থপ্রতিম রায়, গিরীন্দ্রনাথ বর্মন, অভিজিৎ দে ভৌমিক, রবীন্দ্রনাথ ঘোষদের ডাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, সেখানেই প্রশংসার পাশাপাশি বলেন, সামনে সিতাই বিধানসভার উপনির্বাচন আছে। তার পর ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন। এই সবগুলিতেই ভাল ফল করতে হবে। লোকসভা নির্বাচনে জয়ের আনন্দে আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না।সিতাই কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন জগদীশ বর্মা বসুনিয়া। তিনি এখন সাংসদ।