মঙ্গলবার মালদার ইংরেজবাজারে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে সেটা শুধু বিডিও’দের জন্য নয়। সরকারি কর্মীদেরও একই বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর আরজি কর হাসপাতালের কাণ্ডে সোমবার সঞ্জয় রায়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড নিয়ে আজ, মঙ্গলবার মালদার সভা থেকে বড় প্রশ্ন তুলে দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে দুলাল সরকার খুন হওয়ার পর তিনি নিজে পৌঁছে গিয়েছেন মালদায়। দুলাল সরকারের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে সোমবার ইংরেজবাজারে নেতার বাড়িতে গিয়েছিলেন। দুলালবাবুর স্ত্রী চৈতালিকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন, স্বামীর অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করার। আর আজ সভা মঞ্চ থেকে হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে দুলাল সরকারের ছবিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সহকর্মী ছিলেন দুলাল সরকার। তাই এই খুনের ঘটনা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘সমাজে মাফিয়াদের কোন জায়গা নেই। যারা সন্ত্রাস করে থাকে সমাজে তাদের জায়গা নেই। আমি স্বজনকে হারিয়েছি। বাবলার অসম্পূর্ণ কাজ করবেন চৈতালি। দুলাল সরকারের পরিবারের পাশে আছি। আমি বাবলা বলে চিনি সেই ছাত্র রাজনীতির সময় থেকে। তাকে হারানো মানে আমার স্বজনকে হারানো। ওর স্ত্রী চৈতালি এখানে আছে। ওকে বলব, মন ভেঙো না। দুলালের অসম্পূর্ণ কাজ তুমি সম্পূর্ণ করো।’
আরও পড়ুন: ‘অন্যায়কে কি ক্ষমা করে দেব?’ সঞ্জয়ের ফাঁসি না হওয়ায় মালদার মঞ্চে প্রশ্ন মমতার
অন্যদিকে আজ, মঙ্গলবার ইংরেজবাজারে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান মঞ্চে দুলাল সরকারের ছবি রেখে ‘স্বজনহারা’র শোকজ্ঞাপন করতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এইসব মাফিয়াদের দাপাদাপি তিনি সহ্য করবেন না সেটাও বুঝিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। দুলাল সরকারকে ঘিরে ধরে পয়েন্ট ব্ল্যাক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করা হয়। তখন ওই তৃণমূল কংগ্রেস নেতা দোকানের দিকে আসছিলেন। হঠাৎ তাঁকে ঘিরে ধরে তিনজন সশস্ত্র আততায়ী। আর খুন করে চম্পট দেয়। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে তদন্ত করতে নেমে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এছাড়া দু’সপ্তাহ আগে ইংরেজবাজারে প্রকাশ্যে দিবালোকে শুটআউটে দুলাল সরকার খুন হন। তারপর মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে দায়ী করেছিলেন। পুলিশ সুপারকে ভর্ৎসনা করে বলেছিলেন, পুলিশের অপদার্থতার কারণে এভাবে দলের নেতাকে হারাতে হল। তাঁর ধমক এবং ক্ষোভের পর সক্রিয়তা বাড়িয়ে দেয় জেলা পুলিশ। একে একে ধরা পড়ে দুলালের হত্যাকারীরা। তখন উঠে আসে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তত্ত্ব। এই পরিস্থিতিতে দলনেত্রীর মালদা সফর এবং সরকারি পরিষেবার মঞ্চে জেলা নেতৃত্বকে বার্তা দেওয়া ও হুঁশিয়ারি দেওয়া মাফিয়াদের বিরুদ্ধে নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।