আজ, সোমবার সমস্ত পুরসভার চেয়ারম্যানদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ নবান্ন সভাঘরের বৈঠকের শুরু থেকেই তীব্র ক্ষোভ উগরে দিতে শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী এই বৈঠকে প্রশ্ন তোলেন, ‘পরিষেবা না পেলে পুরসভার দরকার কী? একের পর এক বেআইনি বাড়ি তৈরি হচ্ছে। বাংলার ছবি বদলে দিচ্ছে। জনপ্রতিনিধি থেকে পুলিশ–আমলা অনেকেই যুক্ত। সবার নাম প্রকাশ্যে বলে অপমান করতে চাই না।’ রাজ্যের পুরসভার পরিষেবা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে এই বৈঠকের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত প্রশাসনিক অফিসারদের বিরুদ্ধে উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি। এই বৈঠক থেকে হাওড়া পৌরনিগমের ব্যবস্থা নিয়ে কার্যত ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। জমি দখল থেকে শুরু করে নানা দুষ্কৃতী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আমি টাকা তোলার লোক চাইছি না। আমি জনসেবক চাইছি। আগামী দিনে কাজ দেখে টিকিট দেওয়া হবে। যারা ঠিক করে কাজ করবেন না। তাদের আর লাগবে না। কিছু জমি মাফিয়া আইনি প্রোটেকশন পেয়ে যাচ্ছে। রাজ্য সরকারের জমিও নেবে আর আরবিট্রেটরের নামে টাকাও নেবে।’
আরও পড়ুন: খাস কলকাতা থেকে যুবককে অপহরণ, ফিল্মি কায়দায় উদ্ধার করল পুলিশ, গ্রেফতার ৮
অন্যদিকে আজকের বৈঠকে পুরনো কথাও মনে করিয়ে দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। আর তা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘সারা হাওড়াতে বেআইনি ভবনে ভরে গিয়েছে। রথীন যখন চেয়ারম্যান ছিল হাওড়াটাকে বারোটা বাজিয়ে দিয়ে গিয়েছে। ওখানে তো বোর্ড মেম্বার, কখনও কমিশনার, ডিএম, এসপি, মন্ত্রী আছে। সরু রাস্তায় বাড়ি তৈরি হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স ঢোকার জায়গা পর্যন্ত সেখানে নেই। অথচ কোনও অ্যাকশন নেওয়া হয় না। একটা গ্রুপ তৈরি হয়েছে। খালি জায়গা দেখলেই লোক বসিয়ে দিচ্ছে। একে তো কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না। আমি কত টানব? বাংলার আইডেন্টটিটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কেন বুঝতে পারছেন না? আপনার এবং আপনাদের টাকা খাওয়ার জন্য বাংলার পরিচয় নষ্ট হচ্ছে। রাজ্য সরকারের জমি পেয়ে বেচে দিচ্ছেন।’
এছাড়া এখনও যেসব সমস্যা আছে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘ফুটপাত জবরদখল বেড়েই চলেছে। পুরসভা তো চোখ দিয়ে দেখে না। পুলিশও দেখে না। যারা দেখে না তাদের সরিয়ে দেওয়া হবে পদ থেকে। বেআইনি পার্কিং থেকে শুরু করে রাস্তা আটকে অটো, টোটো দাঁড়িয়ে থাকছে। পুলিশ দেখেও দেখছে না। লোভটা বন্ধ করে দিন। যারা লোভ করবে তাদের মুখ লিউকোপ্লাস্ট দিয়ে বন্ধ করে দিন। টেন্ডার করার ক্ষমতা আর লোকালি হবে না। সব সেন্ট্রালি হবে। আমি হাওড়ার জেলা প্রশাসকের অধীনে বিধায়কদের নিয়ে একটা কমিটি করতে বলছি। কাউকে পোষার জন্য আমি এখানে আসিনি। আমি মানুষকে দেখার জন্য এখানে এসেছি। রাজ্য সরকার টাকা দিলেও হাওড়ায় আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেনের কাজ হয়নি। প্ল্যান পাশ করতে গিয়েও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অথচ আমরা অনলাইন করে দিয়েছিলাম। হাওড়ায় কোনও বোর্ড নেই। এসডিও চালান। তিনি কোনও কাজ করছেন না।’