লোকসভা নির্বাচন মিটে গিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস ২৯টি আসন জিতে পিছনে ফেলে দিয়েছে বাম–কংগ্রেস জোটকে এবং বিজেপিকে। সিপিএম গোটা বাংলায় একটাও আসন পায়নি। কংগ্রেস একটি জিতেছে। আর বিজেপি আসন সংখ্যা কমে ১২ হয়েছে। এই আবহে এবার সন্দেশখালির একাধিক জায়গায় এখনও সিবিআই–ইডির উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে বলে খবর। ‘শাহজাহান বাহিনী’র দাপটও আছে বলে সূত্রের খবর। এবার সন্দেশখালিতে আসতে চলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ তিনি ঘোষণা করেছিলেন, বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র তৃণমূল কংগ্রেস জিতলে সন্দেশখালি আসবেন তিনি। কিন্তু কবে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী? সেটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে প্রস্তুতি শুরু করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা।
লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে সন্দেশখালি সংবাদ শিরোনামে জায়গা করে নেয়। নানা ঘটনার কথা সামনে আসে। শেখ শাহজাহানের অত্যাচারের কথা উঠে আসে। যদিও পরে স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো সামনে আসতেই সন্দেশখালির গোটা পরিবেশ ঘুরে যায় তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে। নারী নিগ্রহের অভিযোগ উঠলেও তা পরে সাজানো বলে উঠে আসে। জোর করে জমি নেওয়ার অভিযোগ ওঠে শাহজাহানের বিরুদ্ধে। তার জেরে এখন তিনি জেলে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে প্রায় ৩৯ হাজার ভোটে জেতা সন্দেশখালি বিধানসভা আসনে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৮ হাজারের মতো ভোটে পিছিয়ে আছে ঘাসফুল শিবির। সুতরাং এমন আবহে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আসবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাগদা উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থীকে ঘিরে বড় অঙ্ক, কে মধুপর্না ঠাকুর? জানুন তাঁর সম্পর্কে
তবে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেসই। হাজি নুরুল ইসলাম এখান থেকে জয়ী হন। পরাজিত হন বিজেপির প্রার্থী রেখা পাত্র। যদিও সন্দেশখালি বিধানসভার ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতে আন্দোলনের আঁচ টের পায় তৃণমূল কংগ্রেস। তার মধ্যে সরবেড়িয়া, জেলিয়াখালি এবং বেড়মজুরের মতো কয়েকটি জায়গায় মানুষের ক্ষোভ দেখা গিয়েছিল। এতকিছুর পরও বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র তৃণমূল কংগ্রেস জেতে। রেখা পাত্র এখন এখানে থাকছেন না। তিনি কলকাতা থাকছেন বলে খবর। তা নিয়ে বিজেপি নেতা–কর্মীদের মধ্যেও ক্ষোভ রয়েছে। কিন্তু সন্দেশখালিতে কেন পিছিয়ে পড়ল তৃণমূল কংগ্রেস? তার বিশ্লেষণও করছেন নেতারা।
সূত্রের খবর, লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এখানকার অনেক কর্মী নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন এবং কাজ করেননি। এখন ফলাফল প্রকাশের পর অনেকে ফিরে এসেছেন। আবার ‘সক্রিয়’ হয়েছেন। তবে এই পিছিয়ে পড়ার কারণ নিয়ে জোর চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। সেই রিপোর্ট রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হবে। তারপর উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। এখন নির্দেশ এসেছে, কোনওভাবেই দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয় এমন কাজ করা যাবে না। তার মধ্যেই একটাই প্রশ্ন উঠছে, মুখ্যমন্ত্রী কবে সন্দেশখালি আসবেন? তারিখ ঠিক না হলেও আসবেন সেটা জানতে পেরেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলার নেতারা। ইতিমধ্যেই লোকসভা নির্বাচনে যাঁরা বিজেপির পক্ষে কাজ করেছেন তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এখন দেখার বিষয়, মুখ্যমন্ত্রী কবে সন্দেশখালি আসেন।