সাধারণত রাজ্যে বড় মাছ বিশেষ করে দেড় কেজি বা তার বেশি ওজনের রুই, কাতলার জন্য ভিন রাজ্যের ওপর ভরসা করতে হয় রাজ্য সরকারকে। বাঙালির চাহিদা মেটাতে তাই ভিন রাজ্য থেকে প্রচুর পরিমাণে মাছ আমদানি করা হয়ে থাকে। এবার বড় মাছের চাহিদা মেটাতে ভিন রাজ্যের উপর নির্ভরতা কমাতে চাইছে রাজ্যের মৎস দফতর। তাই বাংলার মৎস্যচাষীরা যাতে এই মাপের মাছ উৎপাদনে স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারেন তার জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে রাজ্যের মৎস্যদফতর। রাজ্যে বড় মাছ চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দফতর।
আরও পড়ুন: এবার ন্যায্যমূল্যে টাটকা মাছ বিক্রি করবে মৎস্য দফতর, রাজ্যজুড়ে বসবে ৩৫ টি স্টল
বর্তমানে রাজ্যের পুকুর বা ছোট জলাশয়গুলিতে যে মাছ চাষ হয় সেগুলির গড় ওজন ৫০০-৭০০ গ্রামের বেশি। এবার রাজ্যবাসীর চাহিদা মেটাতে সরকার দেড় কেজি ওজেনের মাছ উৎপাদনের দিকে নজর দিতে চাইছে। ইতিমধ্যে এনিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জেলায় জেলায় পাঠিয়ে দিয়েছে দফতর। তাতে বলা, মাছ চাষের দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে উপভোক্তা বাছাইয়ের কাজ করবে পঞ্চায়েতগুলি। এই অনুযায়ী সব জেলায় বড় জলাশয়গুলিতে রুই, কাতলা মাছ যাতে বেড়ে উঠতে পারে তার জন্য ১৪ মাস ধরে চাষ করা হবে। সেগুলির ওজন দেড় কেজি বা বেশি হলেই সেই মাস বিক্রি করা যাবে। তবে যাদের মৎস্যজীবী রেজিস্ট্রেশন কার্ড থাকবে তাদেরকেই এই দায়িত্ব দেবে মৎস্য দফতর। মাছের খাবারের জন্য খরচ মৎস্যদফতরের তরফে বহন করা হবে। কিন্তু, দেড় কেজি ওজনের কম মাছ তুলে নেওয়া হলে ওই টাকা দেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, মৎস্য দফতরের লক্ষ্য হল প্রতি হেক্টরের সাড়ে ১৩ হাজার বড় মাছ উৎপাদন করা। জানা যাচ্ছে, প্রথম পর্যায়ে ৪৩০ হেক্টর জলাশয়ে বড় মাছ চাষ করা হবে। পরে তা বাড়ানো হবে। এরজন্য মৎস্য দফতরের আধিকারিকরা নজরদারি চালাবেন।
সেক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ এক হেক্টর জলাশয়ে সরকারি সহযোগিতায় মাছ চাষ করতে পারবেন। তবে সমবায় হলে সেই মাছ চাষ করা যাবে ৩ হেক্টর জলাশয়ে। বাজারে বড় মাছের যোগান যাতে বাড়ে সেইদিকেও নজর দিতে চায়ছে মৎস্য দফতর। জানা গিয়েছে, জেলার ভিত্তিতে সবচেয়ে বেশি বড় মাছ চাষের পরিকল্পনা রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে। এখানে ৬০ হেক্টর জলাশয়ে মাছ চাষ করা হবে। এছাড়া উত্তর ২৪ পরগনায় ৪৫ হেক্টর জলাশয়ে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান, কোচবিহার এবং মালদায় ৩০ হেক্টর করে জলাশয়ে এই মাছ চাষ করা হবে। ইতিমধ্যেই জলাশয়গুলি চিহ্নিত করা হয়েছে।