আরজি কর কাণ্ডে ডাক্তারদের আন্দোলনদের মাঝেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে একটি বার্তা দিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বেশ কয়েক মিনিটের সেই বার্তার ভিডিয়ো রেকর্ড করে রাজভবনের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে পোস্ট করা হয়। আর সেই ভিডিয়ো নিয়েই এবার হাসির ছলে রাজ্যপালকে তপ দাগলেন তৃণমূল নেতা গৌতম দেব। শিলিগুড়ির মেয়র অভিযোগ করেন, রাজ্যপাল টেরিপ্রম্পটার দেখে দেখে বক্তৃতা পাঠ করছেন। এবং বন্ধ ঘরে বসে রাজ্যপাল যে দামী সানগ্লাস পরে আছেন, তাতে নাকি সেই টেলিপ্রম্পটারের প্রতিফলন ঘটছে। এই আবহে গৌতম দেব এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে লেখেন, 'স্যার, অনুগ্রহ করে রেয়ব্যানের সানগ্লাসটা খুলে নিন। আপনার টেলিপ্রম্পটারের প্রতিফলন হচ্ছে সানগ্লাসে।' (আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে ভিজেও চলছে ডাক্তারদের আন্দোলন, এরই মাঝে 'বড় পদক্ষেপ' সরকারের)
আরও পড়ুন: একই পোশাকে ১ মাসের ওপরে কাটাল সঞ্জয়, গায়ের দুর্গন্ধে নাজেহাল তদন্তকারীরা
এদিকে নিজের বক্তৃতার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি সামাজিক বয়কটের ডাক দেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজভবন থেকে প্রকাশিত সেই ভিডিয়ো বার্তায় তিনি মমতাকে 'লেডি ম্যাকবেথ' বলে সম্বোধন করেন। তাঁর কথায়, 'আমাকে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন উদ্ভূত সংকট মোকাবিলায় রাজ্যপাল কী পদক্ষেপ করবেন? আমি সংবিধান, জনতা ও মানুষের কাছে দায়বদ্ধ। সরকার বর্তমান সংকট মোকাবিলায় ব্যর্থ। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রবলভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। সব থেকে বড় বিড়ম্বনা হল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই, স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনিই আবার মুখ্যমন্ত্রী। মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়ার বদলে তাদের বিরোধিতা করছেন বাংলার লেডি ম্যাকবেথ। হুগলি নদীর সব জল দিয়েও বাংলার লেডি ম্যাকবেথ নিজের নোংরা হাত দু’টো পরিষ্কার করতে পারবেন না।' তিনি আরও বলেন, ‘সড়কে হিংসা। ঘরে হিংসা, ক্যাম্পাসে হিংসা, হাসপাতালে হিংসা, গ্রামে হিংসা, শহরে হিংসা। সব জায়গায় হিংসা। আর মানুষের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বহুমত গণতন্ত্রের অংশ। চুপ করাবেন না। এই নিঃস্তব্ধতাও হিংসা।’
আরও পড়ুন: প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর একবছর পর বিয়ে কল্পনা দাসকে, CJI-এর অর্ধাঙ্গিনী বাঙালিই নন!
রাজ্যপাল সেই বার্তায় আরও বলেন, 'লোকে বলছে, আজকে বাংলা কোন নৈরাজ্যের দেশে পরিণত হয়েছে? এর দায়িত্ব তো কাউকে নিতে হবে। যতদিন বাংলার মানুষ বিচার না পাচ্ছেন, দোষীদের গ্রেফতারির জন্য পদক্ষেপ হয়, যতক্ষণ মানুষের মনে এই আস্থা না জন্মায় যে সুবিচার হয়েছে আমি রাজ্যপাল হয়ে অপেক্ষা করতে পারি না। তাই আমি সংকল্প নিচ্ছি যে আমি মুখ্যমন্ত্রীকে সামাজিকভাবে বয়কট করব। আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও প্রকাশ্য মঞ্চে থাকব না। আমি এমন কোনও প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে থাকব না যেখানে মুখ্যমন্ত্রী হাজির রয়েছেন। রাজ্যপাল হিসাবে আমার ভূমিকা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনেই সীমাবদ্ধ থাকবে। এর থেকে কমও না বেশিও না।'