লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের নামে 'ভিক্ষা' দেওয়া হচ্ছে। আর সেই 'ভিক্ষা'-র জন্য মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসকে কীভাবে ভোট দিলেন, তা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন একশ্রেণির 'বিপ্লবী'-রা (মহম্মদ সেলিমের ভাষায় অন্তত সেটাই)। তবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে দেওয়া অর্থ যে স্বপ্নপূরণের পথ হতে পারে, তা প্রমাণ করলেন বীরভূমের নলহাটির ছেলে মাহফুজ আলম। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, বাবার সঙ্গে চায়ের দোকান সামলানোর পরে মায়ের লক্ষ্মী ভাণ্ডারের টাকায় নেট রিচার্জ করে রাতে পড়াশোনা করে সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকায় (নিট) ৭২০ নম্বরের মধ্যে ৬৭৩ নম্বর পেয়েছেন। স্বপ্ন দেখছেন চিকিৎসক হওয়ার। আর সেই বিষয়টি নিয়ে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের 'সাফল্য' তুলে ধরেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকরা।
মাহফুজের ইতিবৃত্ত
সংবাদ প্রতিদিনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছোট থেকেই অনটনের মধ্যে বড় হয়েছেন মাহফুজ। মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৯২ শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন। তবে করোনাভাইরাস মহামারীর জন্য সেই বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি। সেই পরিস্থিতিতে বিজ্ঞান নিয়ে একাদশ শ্রেণিতে ভরতি হয়েছিলেন। তখন অবশ্য ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নটা ছিল না। নিজের খেয়ালেই বিজ্ঞান নেবেন বলে ঠিক করেছিলেন।
স্কুলে ভরতি হলেও পড়াশোনা চালানোর মতোও টাকা ছিল না মাহফুজের পরিবারের হাতে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, গরুর দুধ বিক্রি করে কয়থা হাইস্কুলের পড়ুয়া মাহফুজের জন্য মোবাইল কিনে দেওয়া হয়েছিল। বই কিনতেও দুধ বিক্রি করে পাওয়া সামান্য টাকাই ভরসা ছিল মাহফুজের পরিবারের কাছে। তারইমধ্যে রাজ্য সরকারের প্রকল্প লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা ঢুকতে শুরু করেছিল মাহফুজের মায়ের কাছে। সেই টাকা দিয়ে প্রতি মাসে ছেলের ফোনে নেট রিচার্জ করে দিতেন তিনি। সেইসব মিলিয়ে পড়াশোনা করতেন মাহফুজ।
প্রথমে লক্ষ্য ছিল IIT, দিয়েছিলেন নেভির পরীক্ষাও
কোনও 'গাইড' না থাকায় নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুটা সন্দিহান ছিলেন মাহফুজ। তারইমধ্যে নেভির পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, পরীক্ষায় পাশ করলেও পরবর্তীতে আটকে গিয়েছিলেন। তারপর ভেবেছিলেন যে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়বেন। কিন্তু পড়াশোনার জন্য কীভাবে টাকা জোগাড় করবেন, সেটা বুঝতে না পেরে ডাক্তারির প্রবেশিকা দেন। তাতেই ৬৭৩ নম্বর পেয়েছেন।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডাক্তারি পড়ার জন্য রাজ্য সরকারের স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পের মাধ্যমে ঋণ নিতে চান মাহফুজ। যে প্রকল্প চালু করেছে মমতার সরকার। তবে কোন কলেজে ভরতি হতে চান, তা এখনও ঠিক করেননি মাহফুজ।