নদিয়ার শান্তিপুরের বিডিও সন্দীপ ঘোষ আগামী ৫ মার্চ (২০২৫) যে সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দিয়েছেন, তা নিয়ে জলঘোলা ও বিতর্ক শুরু হতেই এই বিষয়ে পদক্ষেপ করল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও)-এর দফতর। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দিব্যেন্দু দাস গোটা ঘটনা চিঠিতে লিখে, এই বিষয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের (দিল্লিতে অবস্থিত) দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও)-এর দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লি এক্ষেত্রে তাদের নির্দেশ দেবে, সেই অনুসারেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
কী ঘটেছিল?
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) তাঁর কার্যালয়ের তরফ থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন নদিয়ার শান্তিপুরের বিডিও সন্দীপ ঘোষ। তাতে বলা হয়েছিল, আগামী ৫ মার্চ তাঁরই দফতরে একটি সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছে। সেই বৈঠকে যেন সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকেন।
জানানো হয়েছিল, সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলির নির্বাচনী বুথ এজেন্টদের নামের তালিকা তৈরি করতে এবং এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়া ও প্রয়াত ভোটারদের সম্পর্কিত তথ্যাবলী নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা করা হবে।
বিরোধী দলনেতার অভিযোগ:
বিষয়টি নজরে আসতেই রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, সংশ্লিষ্ট বিডিও নিজের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে, নির্বাচন কমিশনের তরফে কোনও রকম নির্দেশ ছাড়াই এই বৈঠক ডেকেছেন। এবং সেটা তিনি করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমোকে খুশি করতে।
যদিও বিডিওর দাবি ছিল, এটা 'কন্টিনিউয়াস প্রসেস' এবং এর জন্য আলাদা করে কমিশনের নির্দেশের বা তাদের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও)-এর দফতরের বক্তব্য:
এই ঘটনা নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই সিইও-র দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শান্তিপুরের বিডিও যা করেছেন, সম্পূর্ণ স্বতঃস্ফূর্তভাবেই করেছেন। তাঁকে কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি।
কিন্তু, এটাও ঠিক যে নির্বাচন সংক্রান্ত বৈঠক ডাকার এক্তিয়ার অবশ্যই বিডিও-র রয়েছে। কিন্তু, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ, অনুমতি বা সম্মতি ছাড়া সেই বৈঠকের আলোচনার বিষয়বস্তু বিডিও ঠিক করতে পারেন না। কিন্তু, এক্ষেত্রে বিডিও সেটা করেছেন।
তাছাড়া, গত জানুয়ারি মাসে শেষ সম্পূর্ণ ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। তাই, বিডিও বৈঠকে যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করার কথা বলেছেন, তার সঙ্গে সরাসরি কমিশনের কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ, তাঁকে এমন কিছু করতে বলা হয়নি।
যদিও এটা ঠিক যে মৃত ও অন্যত্র চলে যাওয়া ভোটারদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ ব্লকস্তরের আধিকারিকদেরই করতে দেওয়া হয়। কিন্তু, এখন সেই কাজ চলছে না। তাহলে কেন শান্তিপুরের বিডিও এ নিয়ে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নিলেন?
সিইও-র দফতরের বক্তব্য, তাদের কাছে এই গোটা বিষয়টি সেভাবে স্পষ্ট হচ্ছে না। সেই কারণেই জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে সমস্ত ঘটনা জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এখন তারা যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবে।