মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিল - পরীক্ষা চলাকালীন যদি কোনও পরীক্ষার্থী অনিয়ম করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনে কঠোরতম পদক্ষেপ করা হবে। বাস্তবে হলও তেমনটা। পর্ষদের নিয়মে ফাঁকি দিতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হল দুই পরীক্ষার্থীকে। বাতিল করে দেওয়া হল তাদের পরীক্ষা।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, সোমবার রাজ্যের দুই প্রান্তে দুই পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। কারণ, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নির্দেশ অমান্য করে তারা পরীক্ষার হলে আধুনিক ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেট নিয়ে ঢুকেছিল। সেই ঘটনা সামনে আসতেই শাস্তির মুখ পড়তে হয় ওই দুই নিয়ম ভঙ্গকারী পরীক্ষার্থীকে।
পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারে এক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। যার জেরে তার পরীক্ষা বাতিল করা হয়। অন্যদিকে, দক্ষিণবঙ্গের হাওড়ার বালি এলাকার এলাকার একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে এক পরীক্ষার্থী স্মার্ট ওয়াচ নিয়ে ঢুকে পড়ে। বিষয়টি নজরে আসতেই ওই পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ করা হয় এবং তারও পরীক্ষা বাতিল করা হয়।
নিয়ম অনুসারে, যেহেতু এই দু'টি ক্ষেত্রেই পরীক্ষা শুরু হওয়ার একঘণ্টার মধ্যেই এই দুই পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নিয়মভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, তাই এবছরের মতো তাদের সব পরীক্ষাই বাতিল করা হল বলে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আজ (সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি - ২০২৫) থেকেই এবারের মাধ্যমিক শুরু হল। আর প্রথম দিনেই নিয়ম ভাঙার দায়ে দুই পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা এবছরের মতো বাতিল করা হল। এই ঘটনা অনভিপ্রেত বলেই মনে করছে শিক্ষামহল। যদিও টুকলি, প্রশ্নপাচারের মতো অনৈতিক কাজ রুখতে পর্ষদ যে কঠোরভাবে পরীক্ষা পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবং সেটা করে দেখাচ্ছে, সেই উদ্য়োগকে সাধুবাদ জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট মহল।
প্রসঙ্গত, মাধ্যমিকে যেকোনও ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা রুখতে এবছর অনেক আগে থেকেই তৎপরতা দেখা গিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কর্তৃপক্ষের তরফে। প্রযুক্তির অপব্যবহার করে যাতে কোনওভাবে টুকলি, প্রশ্নপাচারের মতো কুকর্ম না করা যায়, তার জন্য পরীক্ষা চলাকালীন একাধিক কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
বিশেষ করে মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, স্মার্ট ওয়াচ, ব্লু টুথের মতো অত্যাধুনিক ডিভাইস বা গ্যাজেটের ব্যবহারে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পর্ষদের নির্দেশ, শুধুমাত্র পরীক্ষার্থীরাই নয়, পরীক্ষার হলে গার্ড দেওয়ার কাজে নিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে শুরু করে পরীক্ষাকেন্দ্রে অন্য়ান্য বিভিন্ন ডিউটিতে মোতায়েন থাকা কর্মীরাও পরীক্ষা চলাকালীন মোবাইল বা স্মার্টফোন নিজেদের কাছে রাখতে পারবেন না। তা জমা রাখতে হবে ভেনু সুপারভাইজার বা ভেনু সেক্রেটারির কাছে।