মাধ্যমিকের অঙ্ক পরীক্ষার দুটি প্রশ্নের মূল্যায়ন ‘হালকাভাবে’ করা হবে। সোমবার পরীক্ষকদের উদ্দেশ্যে জারি করা এক নির্দেশিকায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, যে দুটি প্রশ্ন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে এবং সেগুলি পাঠ্যক্রমের বাইরে থেকে এসেছে বলে অভিযোগ উঠেছে, সেগুলির সিলেবাসেই আছে। তাও পরীক্ষার্থীদের স্বার্থে ওই দুটি প্রশ্নের মূল্যায়নের প্রক্রিয়া কিছুটা শিথিল করে দেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষার্থীরা যদি ওই দুটি প্রশ্ন ‘অ্যাটেম্পট’ করে এবং সঠিক পদ্ধতি মেনে অঙ্ক কষে, তাহলে তাদের নম্বর দেওয়া হবে বলে পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে।
সিলেবাসের মধ্যে থেকেই প্রশ্ন এসেছে, বলল পর্ষদ
পর্ষদের নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার অঙ্কের প্রশ্নপত্র খতিয়ে দেখেছে বিশেষজ্ঞ কমিটি। সেই কমিটি জানিয়েছে যে সব প্রশ্নই পাঠ্যক্রমের মধ্যে থেকে এসেছে। বজায় রাখা হয়েছে ভারসাম্য। তবে তারপরও পড়ুয়াদের স্বার্থে এক্সামিনার (পরীক্ষক) ও স্ক্রুটিনাইজার এবং হেড এক্সামিনারদের (মূল পরীক্ষক) কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
কোন কোন প্রশ্নের ক্ষেত্রে হালকাভাবে খাতা দেখা হবে?
সেই পরামর্শের বিষয়ে পর্ষদের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, উত্তরবঙ্গ প্রশ্নপত্র সেটের তিনের দাগের ছয় নম্বর প্রশ্ন, বর্ধমান অঞ্চলের তিনের দাগের তিন নম্বর প্রশ্ন, মেদিনীপুর অঞ্চলের তিনের দাগের চার নম্বর প্রশ্ন, কলকাতা অঞ্চলের তিনের দাগের এক নম্বর প্রশ্ন এবং সব অঞ্চলের ১৫-র দাগের দুই নম্বর প্রশ্নের মূল্যায়ন করতে হবে 'অনুকূলভাবে এবং অভিন্নভাবে'। পড়ুয়ারা সঠিক পদ্ধতি মেনে অঙ্ক কষলেই তাদের নম্বর দেওয়া হবে বলে পর্ষদের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সেইসঙ্গে পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, ওই প্রশ্নগুলি সিলেবাসের মধ্যে থেকেই এসেছে। যেগুলির ক্ষেত্রে অবশ্য পর্যাপ্ত বিকল্প ছিল। তিনের দাগে মোট ছ'টি প্রশ্ন ছিল (সত্য নাকি মিথ্যা লিখতে হত)। পাঁচটি করতে হত। বরাদ্দ ছিল এক নম্বর করে। আবার ১৫-র দাগে মোট তিনটি প্রশ্ন ছিল। দুটি করতে হত। প্রতিটির জন্য চার নম্বর ছিল। ফলে যে প্রশ্নগুলি নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল, সেগুলিতে ছিল বিকল্প। যে বিষয়টা পর্ষদের তরফে তুলে ধরা হয়েছে।
পড়ুয়ারা যেন বঞ্চিত না হয়, আর্জি শিক্ষকদের
আরও সেই বিষয়টি নিয়ে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেছেন, ‘মাধ্যমিকে অঙ্ক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে শিক্ষক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সচিবের কাছে বিষয়টি তুলে ধরি।'
তিনি আরও বলেন, 'পর্ষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে বিষয়টি নিয়ে তারা পর্যালোচনা করছে। শিক্ষার্থীদের দিকে তাকিয়ে (উত্তরপত্র) মূল্যায়ন করা হবে বলে পর্ষদ জানিয়েছে। আমরা পর্ষদের কাছে আবেদন করছি, যথাযথভাবে পর্যালোচনা করে ছাত্র-ছাত্রীদের উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হোক। ছাত্র-ছাত্রীরা কোনওভাবে যেন বঞ্চিত না হয়, সেই দিকটি দেখতে হবে।’