লকডাউনে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ঝাঁপ পড়ে গিয়েছে পানশালায়। পেটের জ্বালা মেটাতে তাই বাড়ি বাড়ি ঘুরে সবজি বিক্রি করছেন শিলিগুড়ির দুই বাদ্যযন্ত্রশিল্পী।
পেশাদার শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে তিন বছর আগে উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দল থেকে উত্তরবঙ্গে বৃহত্তম শহর শিলিগুড়িতে এসে পৌঁছেছিলেন প্রশান্ত মিত্র (৪৮) ও রাহুল সরকার (৩৩)। ক্রমে শহরের দুটি পানশালায় ড্রাম ও কিবোর্ড শিল্পী হিসেবে কদর বাড়ে দুজনেরই। কিন্তু করোনার জেরে দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষিত হওয়ায় বন্ধ হয়েছে পানশালা। আরও অসংখ্য বার-শিল্পীর সঙ্গে কাজ হারিয়েছেন দুই অসমবয়েসি বন্ধুও।
রাহুলের বাবা, স্ত্রী ও ছোট্ট ছেলে রয়েছেন জগদ্দলেই। ছেলে সবে প্লে-স্কুলে যেতে শুরু করেছে। কাজ হারিয়ে তাঁদের সকলের খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন শিল্পী। কখনও ভাবিনি সবজি বেচতে হবে। কিন্তু বাস্তব মেনে নিতেই হয়, জানিয়েছেন শিল্পী।
একই অবস্থা তাঁর বন্ধু প্রশান্তরও। অসমে বাবা ও বোনের খরচ তো দূরস্থান, নিজের দিনগুজরান করতেই কোনও উপায় খুঁজে পাননি। শেষমেষ তাই উত্তরবঙ্গ বারশিল্পী সংগঠনের (NBSPA) থেকে পাওয়া সামান্য অর্থ দিয়ে দাঁড়িপাল্লা কেনার টাকা জোগাড় করে নিজের সাইকেলের পিছনে প্লাস্টিক কন্টেনারে আনাজপত্র নিয়ে রাহুলের সঙ্গে ঘুরছেন দরজায় দরজায়।
শিলিগুড়ির প্রায় ৫০টি পানশালায় মোট হাজারখানেক সংগীতশিল্পী কাজ করেন। বাঁধা মাইনে নয়, দিনপ্রতি তাঁদের আয় ৫০০-৭০০ টাকার মধ্যে। লকডউনের জেরে তাঁরা সকলেই আপাতত বেরোজগেরে।
এই সমস্ত বারশিল্পীদের কোনওসামাজিক নিরাপত্তা নেই, জানিয়েছেন NBSPA সম্পাদক দীপ চট্টোপাধ্যায়। পানশালায় জনপ্রিয় স্যাক্সোফোন শিল্পী ছাড়াওএ ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে স্থানীয় স্কুলে তিনি কর্মরত। নিজেদের সাহায্য করতেই অ্যাসোসিয়েশন খোলেন গত এপ্রিল মাসে, জানিয়েছেন দীপ।