বৃহস্পতিবারের বিকেলে আরামবাগে ভরা সভায় বক্তব্য রাখছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শাসকদলের বিরুদ্ধে একের পর এক আক্রমণ করে চলেছেন। রাজ্য সরকারের ‘দুয়ারে সরকার’কে ‘যমের দুয়ারে সরকার’ বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। এমন সময় হঠাৎ সভা ছেড়ে উঠে পড়তে থাকলেন মানুষ। আর তা চোখে পড়তেই দিলীপ ঘোষের অনুরোধ, ‘একটু বসুন।’
গেরুয়া শিবিরের দাপুটে নেতাকে রীতিমতো অনুনয়–বিনয় করতে দেখা গেল এদিন। একদিকে, যখন তিনি বলছেন, ‘আজ পশ্চিমবঙ্গের যা অবস্থা তার জন্য দায়ী তৃণমূল। তাই তৃণমূল ছেড়ে লোকে পালাচ্ছে।’ অন্যদিকে, তখনই দলে দলে মানুষজনকে সভা ছাড়তে দেখা গেল আরামবাগে। আর তাঁদের বসতে অনুরোধ করে দিলীপ ঘোষ বললেন, ‘কী হল? আর দশ মিনিট বসুন। সময় হয়ে গেছে। একসঙ্গে বাড়ি যাব। আমি তো অনেক দূর যাব। আপনারা তো পাশেই যাবেন। একটু বসুন।’
জনমানবকে ফের জনসভায় ফিরিয়ে নাম না করে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘যেভাবে তৃণমূলের লোকেরা দল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, আর কয়েকদিন পর পিসি, ভাইপো আর বাড়ি পাহারা দেওয়ার জন্য ববি হাকিম ছাড়া আর কেউ থাকবে না।’ তাঁর আরও কটাক্ষ, ‘তৃণমূলের বিধায়ক, পঞ্চায়েত প্রধানদের ফোন ধরার জন্য আলাদা লোক রাখা হয়েছে। তাঁদের ফোন এলে তা রিসিভ করছে কোনও পুলিশকর্মী। পাছে যদি কেউ বিজেপি–র লোকের সঙ্গে কথা বলে, যদি দল ছেড়ে পালায় এই হল ভয়।’
রাজ্য বিজেপি সভাপতি এদিন অভিযোগ করে বলেন, ‘বাংলার মায়েরা পরিবর্তনের আশায় তৃণমূলকে ক্ষমতায় আনল। কিন্তু সেই মায়েদের ওপরই আজ সবচেয়ে বেশি অত্যাচার হচ্ছে। রাজ্যে সিমি, আলকায়দা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। পুলিশ অপরাধীদের ধরতে গেলে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে।’ দিলীপ ঘোষের হুঁশিয়ারি, ‘পঞ্চায়েত ভোটে অত্যাচারের যোগ্য জবাব দেওয়া হবে বিধানসভা নির্বাচনে।’
এই কাটমানি আর সিন্ডিকেটের সরকার আর চলবে না বলে দাবি করে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘মাস্টারির চাকরি দিবি বলেছিলি আমার ছেলেকে। ১০ লাখ টাকা নিয়েছিলি। চাকরি তো হল না। এবার টাকা ফেরত দে— এই বলে এর পর থেকে তৃণমূল নেতাদের কলার ধরবে মানুষজন।’ আমফান দুর্নীতি নিয়েও এদিন সরব হন দিলীপ ঘোষ।