ফের প্রশাসনিক বৈঠকে মেজাজ হারালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন শেষ পর্যায়ে বৈঠক চলছে। রাজ্যে কোথায় বাগদি, বাউড়ি ও মতুয়া কালচারাল বোর্ডের হেড কোয়ার্টার হবে, কারা দায়িত্বে থাকবেন, ততক্ষণে জানিয়েছে দিয়েছেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরপরই বাউড়ি সম্প্রদায়ের জন্য উন্নয়ন পর্ষদ তৈরি করে দেওয়ার আবেদন জানান ছাতরা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সহদেব বাউড়ি। আর তাতেই মেজাজ হারালেন মুখ্যমন্ত্রী।
তখন প্রায় চেয়ার ছেড়ে উঠতে যাচ্ছিলেন মমতা। ধমকের সুরে তিনি বলেন, ‘কী শুনলে এতক্ষণ? কালচারাল বোর্ড আর উন্নয়ন পর্ষদ আমরা একই অর্থে ব্যবহার করি।’ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘আর কিছু চাইবে না। অনেক দিয়ে দিয়েছি। আগে কিছুই ছিল না। সব করে দেওয়া হচ্ছে ধীরে ধীরে। এটা তো বুঝতে হবে যে সরকারের একটা সীমাবদ্ধতা আছে। প্রতিটা পয়সা সাধারণ মানুষের। সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা বেরিয়ে গেল করোনার জন্য। কেন্দ্র কিন্তু টাকা দেয়নি। অন্য জায়গায় সরকারি কর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না। আমরা ১ তারিখের মধ্যে বেতন দিচ্ছি, পেনশন দিচ্ছি।’
উন্নয়ন পর্ষদের জন্য আবদার করার আগে সহদেব বাউড়ি মুখ্যমন্ত্রীকে তফসিলি বন্ধু প্রকল্পে বিধবাদের সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্যও আবেদন জানান। তখনও একপ্রকার রাগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তর দেন, ‘সব সময় পাকামো! এটা দাও, ওটা দাও। সারাক্ষণ দাও দাও দাও! টাকাটা কোথা থেকে আসবে একবার ভেবেছ? শুধু চাইলেই হয় না। আমি যা দিয়েছি তার আগে কেউ এক শতাংশও করতে পারেনি। সারা পৃথিবীতে সামাজিক কাজে এক নম্বরে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। ১০ কোটি মানুষের মধ্যে ৯ কোটি মানুষ কিছু না কিছু পরিষেবা পেয়েছে।’
উল্লেখ্য, এদিন প্রশাসনিক বৈঠকে জানানো হয়েছে, বাউড়ি কালচারাল বোর্ডের সদর দফতর করা হচ্ছে বাঁকুড়ায়। বর্ধমানে করা হবে বাগদি বোর্ডের হেড কোয়ার্টার। মতুয়া সম্প্রদায়ের দফতর রয়েছে ঠাকুরনগরে। মুখ্যমন্ত্রী এদিনও জানান, সম্প্রদায়েক উন্নয়নের জন্য বাউড়ি ও বাগদিরা ৫ কোটি টাকা করে পাবেন। আর ১০ কোটি টাকা পাবে মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদ।