৭ ডিসেম্বর, সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসেবে জেলা সফর শুরু করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ওদিকে এদিনই লক্ষাধিক যুব কর্মী–সমর্থক নিয়ে উত্তরকন্যা ঘেরাওয়ের ডাক দিলেন বিজেপি–র যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। শনিবার জলপাইগুড়িতে যুব মোর্চার কার্যকারিণী সভায় এই ঘোষণার পাশাপাশি এক চাঞ্চল্যকর দাবি করেন সৌমিত্র। তাঁর কথায়, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে যে কোনও সময় রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে ডাকতে পারেন।’
সৌমিত্র এদিন জানিয়েছেন, যুব মোর্চার উত্তরকন্যা ঘেরাওয়ের কর্মসূচিতে তাঁদের স্লোগান থাকবে, ‘উত্তরবঙ্গ বঞ্চিত। উদাসীন রাজ্য সরকার।’ জলপাইগুড়ি জেলার যুব মোর্চার সভাপতি ও পদাধিকারী নেতাদের নিয়ে এক জরুর বৈঠক শেষে সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘উত্তরকন্যা শুধুই একটা বিল্ডিং। এখানে কোনও কাজ হয় না। এখানকার সাধারণ মানুষের জন্য উত্তরবঙ্গের তৃণমূল নেতারা কিছুই করেননি। তাঁরা খালি নিজেদের পকেট ভরেছেন। এর প্রতিবাদে আমরা লক্ষাধিক যুব মিলে ৭ ডিসেম্বর উত্তরকন্যা ঘেরাও করব।’
শুক্রবার দিল্লিতে গিয়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছেন কোচবিহার দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। এমন আর কেউ কি বিজেপি–তে আসছেন? এর উত্তরে এদিন সৌমিত্র বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারী দিক থেকে একটি ইতিবাচক সাড়া আমরা লক্ষ্য করতে পারছি। এছাড়া লাইনে রয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সৌরভ চক্রবর্তী, গৌতম দেব, রবি ঘোষরা। তাঁরাও যে কোনও সময়ে দল বদল করতে পারেন। তবে তাঁদের বিজেপি–তে নেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন শীর্ষ নেতৃত্ব।’
শনিবার সকালেই রাজ্য বিজেপি সভাপতি দাবি করেছিলেন যে আগামী এক মাসের মধ্যে তৃণমূল দলটাই থাকবে না। সেই একই কথা এদিন শোনা যায় বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের মুখে। তাঁর দাবি, ‘এক মাসের মধ্যে তৃণমূলের আর কোনও অস্তিত্ব থাকবে না। সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে যে কোনও সময় মুখ্যমন্ত্রীকে ডাকতে পারেন রাজ্যপাল। রাজ্যপাল আচমকা একদিন হয়তো মুখ্যমন্ত্রীকে ডেকে বলবেন, আপনার ১৪৯ ম্যাজিক ফিগারটি দেখান। চারিদিকে যা হচ্ছে সেই সম্ভাবনাই এখন প্রবল।’
যদিও সৌমিত্র খাঁয়ের এই সব বক্তব্য উড়িয়ে দিয়েছেন জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী। বিজেপি সাংসদের উদ্দেশ্যে তাঁর কটাক্ষ, ‘সদ্য বিজেপি–তে যোগ দিয়ে তিনি মধুচন্দ্রিমা কাটাচ্ছেন। ও বোধহয় ভুল গিয়েছে জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা, তাঁর দীর্ঘ আন্দোলন, লড়াইয়ের কথা। এই সরকারের সঙ্গে মানুষ রয়েছেন। এত সহজে এই সরকারকে সরানো যাবে না। দলবদলের সম্ভাবনার মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি নেতারা।’