ফের রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ‘বহিরাগত’ ইস্যু থেকে শুরু করে আমফান প্রসঙ্গ— সবটাতেই এদিন তিনি তৃণমূলশাসিত রাজ্য সরকারের তুলোধনা করেন। এদিন সস্ত্রিক তমলুকে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখানে মাতঙ্গিনী হাজরার পূর্ণাবয়ব মূর্তিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে তিনি বর্গভীমা মন্দিরে পুজো দেন। এর পরই কোলাঘাটে সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেন রাজ্যপাল।
প্রথমেই এদিন ‘বহিরাগত’ ইস্যু নিয়ে সরব হন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তিনি বলেন, ‘সংবিধানে উল্লেখিত ‘উই, দ্য পিপল’–এর অর্থ হল ভারতমাতার যে কোনও সন্তান এই দেশের কোনও প্রান্তেই বহিরাগত নন।’ তাঁর অভিযোগ, ‘এই রাজ্যে যখন অন্য রাজ্যের লোকজন আসে তখন তাঁদের বহিরাগত বলা হয়। এটা ভারতের সংবিধানের প্রতি অপমানজনক। আমি এর ভৎর্সনা করি।’ রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের কথায়, ‘ভারতে কেউই বহিরাগত নয়।’
আমফান ঘূর্ণিঝড় প্রসঙ্গেও এদিন রাজ্য প্রশাসনকে আক্রমণ করেন রাজ্যপাল। তাঁর অভিযোগ, ‘আমফানের পর পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল রাজ্য, বিশেষ করে কলকাতার পুর প্রশাসন।’ তাঁর প্রশ্ন, ‘দুর্যোগের পূর্বাভাস ছিল, তা সত্ত্বেও কেন প্রস্তুত ছিল না রাজ্য?’ আমফানের ত্রাণ থেকে শুরু করে করোনা মোকাবিলায় রাজ্যের খরচ নিয়েও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যপাল। তাঁর অভিযোগ, করোনা মোকাবিলায় প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার পণ্য কিনেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু তার কোনও হিসেব সরকারের কাছে নেই।
রাজ্যপালের দাবি, ‘মুখ্যমন্ত্রী নিজের সাংবিধানিক দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করতে পারছেন না। রাজ্য পুলিশ প্রশাসনেও রয়েছে একাধিক অসঙ্গতি।’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘রাজ্যের কৃষকদের হেনস্থা করা হচ্ছে। তাঁরা কেন্দ্রের আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। কিন্তু কেন্দ্র সরকার কৃষকদের ১০০ শতাংশ সাহায্য করছে। কিন্তু তাতে বাধা দিচ্ছে রাজ্য সরকার।’ বলা বাহুল্য, এদিন সাংবাদিক বৈঠকে যে ভাবে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যপাল সুর চড়ালেন তাতে ভবিষ্যতে সহজে এই বিবাদ কমার নয় বলেই মনে করছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল।