দার্জিলিং পৌঁছে ইতিমধ্যে সেখানকার রাজভবনে বসে স্থানীয় পুলিশ–প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে শুরু করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। সোমবার টুইট করে নিজের কর্মব্যস্ততার কথা সকলের নজরে আনার পাশাপাশি রাজ্যপাল জানান, রবিবার শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার অথর্ব ত্রিপুরারির সঙ্গে তিনি বৈঠক করেছেন। আর এদিন তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে বৈঠকে বসেন দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার ড. সন্তোষ নিম্বলকর ও জেলাশাসক এস পুনমবালম। এদিন পুলিশ সুপার ও জেলাশাসককে রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ থাকার কথা জানিয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, এদিন প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করেন দার্জিলিংয়ের এসপি ও জেলাশাসক। বৈঠক শেষে রাজ্যপাল বলেন, ‘এই প্রথম কোনও জেলার পুলিশ সুপার ও জেলাশাসক আমার সঙ্গে দেখা করলেন, আলোচনা করলেন। তাঁদের আমি বুঝিয়েছি যে প্রশাসনিক কর্তারা কখনও কোনও রাজনৈতিক দলের হতে পারেন না। তাঁদের একটা আলাদা মর্যাদা থাকে যা সবসময় তাঁদের রাজনৈতিক কর্মীদের মতো আচরণ করতে বাধা দেয়।’
পরের বছরই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। এবং এবার যাতে কোনওরকম হিংসাত্মক ঘটনা জেলায় জেলায় না ঘটে সেই দাবি জানিয়ে এসেছেন রাজ্যপাল। এদিনও তিনি রাজ্যে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করানোকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি এদিন বলেন, ‘প্রথম সেবক হিসেবে আমি এটা পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে কথা দিতে চাই যে আসন্ন নির্বাচন নিরপেক্ষ, নির্ভীক ও সুষ্ঠুভাবে করতে যা যা করা উচিত আমি সব করব। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যতদূর অবধি যেতে হয় আমি যাব।’
এদিকে, এদিনও রাজ্যপালের কাজকর্মের কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘রাজ্যপালের আসন নিয়ে খেলা শুরু করেছেন তিনি। রাজনৈতিক দলের সভাপতির যা কাজ তা–ই করে চলেছেন রাজ্যপাল।’ অন্যদিকে, বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুর দাবি, ‘বর্তমান সরকারকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা সম্ভব নয়।’
রাজ্যপালের সঙ্গে দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক, পুলিশ সুপারের সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে কটাক্ষ করে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ছিল না, তাই এতদিন ডিএম, এসপি–রা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেননি। এবার হয়তো তিনি দেখা করার নির্দেশ দিয়েছেন, তাই তাঁরা দেখা করেছেন।’ এ প্রসঙ্গে বিজেপি–র সায়ন্তন বসুর জবাব, ‘কোনও রাজ্যের রাজ্যপালের সঙ্গে ডিএম, এসপি–রা দেখা করবেন, এটাই তো স্বাভাবিক। কারণ, রাজ্যপাল আমাদের সাংবিধানিক প্রধান। কিন্তু জেলাশাসক, পুলিশ সুপাররা যদি রাজ্যপালকে দেখে পালিয়ে যায়, তবে সেই সরকারের কী অবস্থা তা বোঝাই যাচ্ছে।’