বোমা বিস্ফোরণ হচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। জঙ্গিরা আশ্রয় নিচ্ছে এখানে। পশ্চিমবঙ্গ দ্বিতীয় কাশ্মীর হয়ে গিয়েছে। বীরভূমের সিউড়িতে চা চক্রে এভাবেই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় পরিষ্কার জানালেন, ‘বাংলাকে পছন্দ না হলে তিনি কাশ্মীরে চলে যেতে পারেন।’
বুধবার সিউড়ি–তে চা চক্রের শেষে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে উপদ্রুত জেলা হচ্ছে বীরভূম। পার্টি অফিসে ঝুড়ি ঝুড়ি বোমা পাওয়া যাচ্ছে। পার্টির নেতার বাথরুমের মধ্যে বস্তায় বোমা পাওয়া যায় এখানে। একটাই কারখানা চলে, বোমার কারখানা। সারা জেলায় বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। সব জঙ্গি ধরা পড়ছে পশ্চিমবঙ্গে।’
দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘কাশ্মীরেও এত জঙ্গি ধরা পড়ে না। পশ্চিমবঙ্গে এসে সব আশ্রয় নিচ্ছে। মুর্শিদাবাদে ২–৩ বার জঙ্গি ধরা পড়ল। সারা রাজ্যে জাল বিস্তার করেছে এই জঙ্গিরা। বীরভূমেও বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। এখানেও জঙ্গি ধরা পড়েছে। পশ্চিমবঙ্গ হয়ে গিয়েছে দ্বিতীয় কাশ্মীর।’
বিজেপি রাজ্য সভাপতির এই বক্তব্যকে বাতিল করেছেন দমদম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তিনি এর প্রতিক্রিয়ায় পরিষ্কার বলেন, ‘এই পাগলের মতো মন্তব্যের আমি আর কী জবাব দেব! দিলীপ ঘোষের যদি পছন্দ না হয়, যদি পশ্চিমবঙ্গ দ্বিতীয় কাশ্মীর হয়ে গিয়ে থাকে, তবে তিনি চলে যাক কাশ্মীরে। এখানে থাকার দরকার নেই।’
এদিন দিলীপ ঘোষকে কঙ্গনা রানাওয়াতের সঙ্গে তুলনা করেছেন সৌগত রায়। তাঁর কথায়, ‘দিলীপ ঘোষের কথার সঙ্গে কঙ্গনার কথার হুবহু মিল দেখছি। কঙ্গনা বলেছিল, মুম্বই পিওকে–র (পাক অকিউপায়েড কাশ্মীর) মতো হয়ে গিয়েছে। তাঁকে তখন সবাই বলেছিল মুম্বই ছেড়ে চলে যেতে। আমিও দিলীপ ঘোষকে বলতে চাই, আপনি বাংলা ছেড়ে যেখানে ইচ্ছে চলে যান। যেখানে বিজেপি আছে চলে যান সেখানে।’
সৌগত রায়ের মতে, ‘আসলে বিজেপি একটা গল্প ফাঁদার চেষ্টা করছে। গল্পটা হল যে পশ্চিমবঙ্গ সন্ত্রাস কবলিত আর এই রাজ্যকে বাঁচাতে পারে একমাত্র বিজেপি। এই ফন্দির বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার। আর দিলীপ ঘোষের বক্তব্যকে আমরা বাতিল করছি।’
এ ব্যাপারে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘এটা একটা অত্যন্ত আপত্তিকর মন্তব্য। আমার মনে হয়, এটা রাজনৈতিক চাপ থেকে দিলীপ ঘোষকে করতে হচ্ছে। কে কত খারাপ কথা বলবে, এই নিয়ে প্রতিযোগিতা চলছে বিজেপি–র নেতাদের মধ্যে। আইনশৃঙ্খলার নিরিখে যদি এই কথা বলে থাকেন তবে তা অত্যন্ত আপত্তিকর। আদি এবং তৎকাল বিজেপি নেতাদের ঝামেলা ঠেকাতে একঝাঁক পরিযায়ী বিজেপি–কে বাংলায় আমদানী করতে হয়েছে। এই চাপ থেকে নিজেকে বাঁচাতে তিনি এই উগ্রতা দেখিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কে খারাপ কথা বলেছেন।’