রেশনে সরকার নির্ধারিত পরিমাণে খাদ্যশস্য দিতে হলে ব্যাবসা তুলে দিতে হবে। কারণ, জেলা থেকে কলকাতা পর্যন্ত চলছে বখরা। শুক্রবার এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন বীরভূমের লাভপুরের এক রেশন ডিলার। এদিন রেশনে কম সামগ্রী মিলছে বলে অভিযোগ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয়রা। কমবেশি একই ছবি দেখা গিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের নারায়ণপুর, মুর্শিদাবাদের জলঙ্গীতেও।
পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেক রেশন কার্ড ধারক কার্ড পিছু বিনামূল্যে মাসে ৫ কেজি করে চাল পাবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ, প্রায় কোথাও নির্দিষ্ট পরিমাণ চাল মিলছে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে নির্ধারিত পরিমানের থেকে কম চাল নিয়েই ফিরতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এর জেরে এপ্রিলের শুরু থেকেই জেলায় জেলায় বিক্ষোভ শুরু হয়। মাস ঘুরলেও বিরাম নেই রেশন বিক্ষোভে।
শুক্রবার সকালে বীরভূমের লাভপুরে এক রেশন ডিলারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, কার্ড পিছু প্রায় ১৫০ গ্রাম করে চাল চাল কম দিচ্ছেন রেশন ডিলার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ।
এর পর সংবাদিকদের রেশন ডিলার বলেন, ‘নির্দিষ্ট পরিমাণে রেশন দিতে গেলে ব্যবসা তুলে দিতে হবে। কলকাতা থেকে জেলা পর্যন্ত বখরা চলছে। বখরা বন্ধ করুন, চাল দিয়ে দেব।’
রেশনে সামগ্রী কম দেওয়ার দায় এদিনও রেশন ডিলারদের ওপরেই ঠেলেছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জেলা থেকে অভিযোগ পেয়েছি। আমাদের ফুড ইন্সপেক্টররা সেগুলি খতিয়ে দেখছেন। আমরা গোটা রাজ্যে ২৮৩ জন রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। দুর্নীতিতে জড়িত থাকায় এদের অনেকের লাইসেন্সও বাতিল হয়েছে।’
সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ‘পরিস্থিতির ওপর আমরা কড়া নজর রেখেছি। কোনও রেশন ডিলার দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এমনকী গ্রেফতারও করা হতে পারে।’
এই নিয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ‘আমরা এব্যাপারে নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি অস্বীকার করেন। আমরা বলেছিলাম, তৃণমূলের একাংশ এই দুর্নীতিতে জড়িত। যাই হোক এতদিন পর সরকার সেটা বুঝতে পারছে। নেই মামার থেকে কানা মামা ভাল।’
ওদিকে বিজেপিরও দাবি, রেশন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তৃণমূল। গরিব মানুষের মুখের গ্রাস কেড়ে নিচ্ছেন শাসকদলের নেতারা।