রাজ্যে ভোটার তালিকায় স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন ১ কোটি ২০ লাখ নাম বাদ পড়বে বলে দাবি করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। তাঁর কথায়, এই সংখ্যক রোহিঙ্গা, অনুপ্রবেশকারীরা বাংলার ভোটার তালিকায় নাম তুলে বসে আছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, 'এসআইআর যদি বাস্তবে কার্যকরী হয়, তাহলে এই সরকারের কোনও নিস্তার নেই। এসআইআরে কমপক্ষে ১ থেকে ১ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ যারা অবৈধভাবে ভোটার হয়ে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে বসে আছে, তাদের নাম বাদ যাবে।' এদিকে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর আবার বলেছেন, 'এসআইআর-এ সবথেকে বেশি ক্ষতি হবে মতুয়া উদ্বাস্তুদের। বিজেপিতে যারা ভোট দেয় তাদের নাম বাদ যাবে। তাতে তৃণমূলের কোনও ক্ষতি হবে না। বরং আসন বাড়বে।'
এদিকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, 'ভোটার তালিকা থেকে শুধুমাত্র চার ধরনের নাম বাদ যাওয়ার কথা। মৃত ভোটার, ডবল বা ট্রিপল এন্ট্রি, ভুয়ো ভোটার এবং অবৈধ অনুপ্রবেশকারী, বিশেষত রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের নাম বাদ যাবে। কোনও ভারতীয় নাগরিক, সে যে ধর্ম বা সম্প্রদায়েরই হোক না কেন, তাঁর নাম বাদ যাবে না। বিহারে ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম বাতিল হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়, তবে এক কোটিরও বেশি মৃত, ভুয়ো এবং অবৈধ অনুপ্রবেশকারীর নাম তালিকা থেকে বাদ পড়বে। মৃত ভোটারের নাম বা অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের নাম ভোটার তালিকায় থাকা গণতন্ত্রের পক্ষে সমীচীন নয়। একটি নির্বাচন সুষ্ঠু ও ত্রুটিমুক্ত করার প্রথম ধাপই হল ভোটার তালিকা সংশোধন করা এবং তাকে ত্রুটিমুক্ত করা। প্রতিটি বুথেই ৩০ থেকে ৫০ জন মৃত ভোট রয়েছে। একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ভোটার তালিকাই হল গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় স্তম্ভ।'
এদিকে গতকাল এসআইআর নিয়ে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, 'ওরা ভাবে কি, ১৫ দিনের মধ্য়ে এসআইআর হয়ে যায়? উৎসবের মধ্যে ১৫ দিনের মধ্যে এসআইআর কীভাবে হবে? নির্বাচন কমিশন কি স্বতন্ত্র ভূমিকা পালন করছে না বিজেপির হয়ে কাজ করছে?' এদিকে এসআইআর প্রস্তুতির কাজ খতিয়ে দেখতে বাংলায় নির্বাচন কমিশনের বিশেষ টিম এসেছে। সেই দলের মাথায় আছেন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতী। তিনি গতকাল দক্ষিণবঙ্গের সকল জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক ও অনান্য প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে ১৫ অক্টোবরের আশেপাশেই বাংলায় চালু হতে পারে এসআইআর।