পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা চিঠি। আর চিঠির বিষয়— ‘শ্রম দফতরের এসএলও কর্মীর স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি চেয়ে আবেদন’! পাঠিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ গোপালনগর থানার নওদা গ্রামের বাসিন্দা আজিজুর রহমান মণ্ডল। কেন? কারণ, লকডাউনের পর ৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে তিনি উপার্জনহীন। বেতন দিচ্ছে না শ্রম দফতর।
শুধু আজিজুরই নন, বনগাঁ মহকুমার এমন ৩৮ জন এসএলও কর্মী একই আবেদন পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে। একই চিঠি গেছে পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর থেকেও। পাঠিয়েছেন সেখানকার ৯০ জন এসএলও কর্মী। সারা রাজ্যে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার এসএলও কর্মী রয়েছেন যাঁরা রাজ্য সরকারের সামাজিক সুরক্ষা যোজনা প্রকল্পে কাজ করেন। তাঁদের কারও ছাটাই হয়নি, কিন্তু তাঁরা আর কোনও বেতন পান না। অভাবের জ্বালায় দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে বলেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এর বিহিত চেয়ে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। শুক্রবার দুপুরে প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল করে সেই আবেদনপত্র বনগাঁর পোস্ট অফিসে গিয়ে জমা দিয়ে এসেছেন বঞ্চিত ওই এসএলও কর্মীরা।
এসওলও কর্মীদের কাজ হল বিভিন্ন গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় অসংগঠিত শ্রমিকদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ৬১টি পেশায় কর্মরত শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করা। নিজের নিজের এলাকায় সামাজিক সচেতনতা প্রচারও করতেন তাঁরা। কিন্তু সম্প্রতি অসংগঠিত শ্রমিকদের বিনামূল্যে সামাজিক সুরক্ষা দানের কথা ঘোষণা করে শ্রম দফতর। তার পর থেকেই অসংগঠিত শ্রমিকেরা টাকা জমা বন্ধ করে দেন। এতে ওই এসএলও কর্মীদের উপার্জনও বন্ধ হয়ে যায়। আর এর জেরেই এই লকডাউনের কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দীর্ঘ ৫ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না তাঁরা।