কিছুদিন ধরে পিছু করছিল রোমিওরা। সেটি বুঝতে পারছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। কিন্তু তারপরও সাহস করেই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করছিল। স্কুল যাওয়া থেকে শুরু করে বাড়ি ফিরে টিউশন পড়তে যাওয়া এবং সেখান ফেরার সময়ে ওই মাধ্যমিক ছাত্রী তা বুঝতেও পারে। কিন্তু এসবে বিশেষ আমল দেয়নি। কিন্তু সে আমল না দিলেও তাকে যে অপ্রস্তুত পরিস্থিতিতে পড়তে হবে সেটা কল্পনাও করেনি ওই মাধ্যমিক ছাত্রী। সামনের মাসেই পরীক্ষা। তাই সেদিকেই ফোকাস ছিল ওই মাধ্যমিক ছাত্রীর। কিন্তু তারপরও তাকে হেনস্তার শিকার হতে হল রোমিওদের হাতে।
ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী যখন টিউশন সেরে বাড়ি ফিরছিল তখন তার থেকে ফোন নম্বর চায় তিনজন রোমিও যুবক। ওই ছাত্রীকে এবার সরাসরি ওই তিন রোমিও বলে, তোমার ফোন নম্বরটা দাও তো মামনি। এই কথা শুনে বেশ ভয় পেয়ে যায় ওই মাধ্যমিক ছাত্রী। কিন্তু বুকে সাহস রেখে পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, না। ছাত্রীর মুখ থেকে সরাসরি ‘না’ শুনে তাকে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ। ওই তিন যুবকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠায় এবং তা সামনে আসায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। ওই মাধ্যমিক ছাত্রীর ক্ষমা চাওয়ার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করা হয় বলেও অভিযোগ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুরের ১ নম্বর ব্লকের বেলিয়াঘাটা এলাকায় এই ঘটনা নিয়ে চর্চা তুঙ্গে উঠেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সীমান্তে ‘অপ্স অ্যালার্ট’ জারি বিএসএফের, বাংলায় কি নাশকতার ছক সাধারণতন্ত্র দিবসে?
ওই মাধ্যমিক ছাত্রীর অভিযোগ, কদিন আগে সে টিউশন থেকে বাড়ি ফেরার সময় পথ আটকে দাঁড়ায় ওই তিন যুবক। তারপর ফোন নম্বর চায়। সেই ফোন নম্বর দিতে অস্বীকার করলে হেনস্তা করা হয়। তোমার ফোন নম্বরটা দাও তো মামনি বলে ডাকা হয়। কিন্তু ফোন নম্বর দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করে ওই তিন যুবক। এই বিপদে পড়ে কোনওরকমে পা ধরে ক্ষমা চেয়ে ওখান থেকে বাড়ি ফেরে সে। তারপর পরিবারকে সব জানিয়ে দেয় ওই ছাত্রী। এই ঘটনার কথা শুনে পরিবারের সদস্যরা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই তিন যুবককে গ্রেফতার করে।
ওই যুবকরা শুধু মাধ্যমিক ছাত্রীকে হেনস্তা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং ছাত্রীকে জোর করে পা ধরিয়ে ক্ষমা চাওয়ার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেওয়া হয়। সেটাতে আরও ছড়িয়ে পড়েছে ঘটনা। স্থানীয় গ্রামবাসীরা এই নিয়ে জোর চর্চা শুরু করেছে। গতকাল সন্ধ্যায় ছাত্রীর পরিবার এই ঘটনার প্রেক্ষিতে দাসপুর থানায় তিন যুবকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তারপরেই সক্রিয় হয়ে ওঠে পুলিশ। আর দ্রুত ওই তিন অভিযুক্ত যুবককে রাতেই গ্রেফতার করে। ওই তিন যুবকের নাম অশোক ভুঁইয়া, দেবাশিস মণ্ডল এবং বিজয় বেরা।