জ্যাঠতুতো দিদির বাড়ি ঘুরতে গিয়েছিল বছর ছয়েকের অনুরাগ। জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে, এই বলে তাকে একপ্রকার জোর করেই শ্মশানে নিয়ে গিয়ে কবর দিয়েছিল তার দিদি ও জামাইবাবু। এই ঘটনায় অনুরাগের বাবার সন্দেহ হওয়ায় পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। ছোট্ট অনুরাগের জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে, নাকি তাকে খুন করা হয়েছে, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এবার কবর খুঁড়ে শিশুর দেহ বার করে ময়নাতদন্তে পাঠাল জয়নগর থানার পুলিশ।
সোমবার চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে বারুইপুরের সূর্যপুর নাচনগাছায়। দুপুরে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বারুইপুরের সূর্যপুরের শ্মশানে ওই শিশুর কবর খোঁড়া হয়। ঘটনাস্থলে ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বারুইপুরের বিডিও মোশারফ হোসেন-সহ জয়নগর ও বারুইপুর দুই থানারই পুলিশ আধিকারিকরা। সেখান থেকে ওই শিশু দেহাংশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ।
মৃত শিশুর বাবা ছোট্টু নস্করের অভিযোগ, তার ছেলের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। ভাইঝিরাই খুন করেছে তার ছেলেকে। বাবার অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এই ঘটনা প্রসঙ্গে বারুইপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বোস বলেন, ‘তার ছেলের মৃত্যু অস্বাভাবিকভাবে হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করেছেন ছোট্টু নস্কর। ময়নাতদন্তের পরই ওই শিশুর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৭ জুন জয়নগর থানা এলাকার গোচারণের কাঁটাপুকুরিয়ার বাসিন্দা অনুরাগ নস্কর (৬) জয়নগরের বুড়োশিবতলা নিজের জ্যাঠতুতো দিদির বাড়িতে ঘুরতে গিয়েছিল। তার বাবা ছোট্টুর অভিযোগ, আচমকাই ১০ জুন ভাইঝি ফোন করে তাঁকে জানায়, অনুরাগকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আবার তার কিছুক্ষণ পরেই ফের ফোন করে ভাইঝি জানায়, অনুরাগের দেহ পুকুরের জলে ভাসছে। বিষয়টি জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে দেখি, ছেলের দেহ পড়ে রয়েছে পুকুরপাড়ে আর তার পা রয়েছে জলের মধ্যে। এরপর তড়িঘড়ি চিকিৎসার জন্য ছেলেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু ভাইঝি ও তার স্বামী জোরজবরদস্তি ছেলের দেহ বারুইপুরের সূর্যপুরের শ্মশানে কবর দিয়ে দেয়। তাতেই আমাদের সন্দেহ হয়। ছোট্টু জানিয়েছেন, ভাইঝিদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে শরিকি বিবাদ চলছে। ওরাই ছেলেকে খুন করেছে।