শিলিগুড়ি সাফারি পার্কের বাঘিনী কিক্কা অনেকদিন ধরে অসুস্থ। তাঁর কলকাতায় এনে চিকিৎসা করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। আলিপুর চিড়িয়াখানায় উন্নত চিকিৎসালয় রয়েছে। সেখানেই বাঘিনীকে নিয়ে এসে চিকিৎসার কথা ভাবছে বনদফতর। সাদা বাঘ সম্প্রতি দুটি শাবক জন্ম দিয়েছিল সে। তবে সেই শাবকের গায়ে ছিল হলদে ডোরাকাটা দাগ। তারপরেই কিক্কার শারীরিক অসুস্থতার বিষয়টি সামনে আসে। জানা যায়, যক্ষা রোগে আক্রান্ত ওই বাঘিনী।
আরও পড়ুন: Number of Tigers in India: দেশে বাড়ছে বাঘের সংখ্যা! কেন্দ্র পেশ করল পরিসংখ্যান
বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি সাফারি পার্কে রয়েছে কিক্কা। সম্প্রতি সে দুটি শাবকের জন্ম দিয়েছিল। তবে জমানোর পর থেকে শাবক দুটি দুর্বল ছিল। তাদের চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু তাদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি। তারপরেই কিক্কার যক্ষ্মা রোগ থাকার বিষয়টি সামনে আসে। তবে তাকে আলিপুর চিড়িয়াখানার চিকিৎসালয়ে আনা হবে কিনা সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আজ শনিবার বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সেখানে যেতে পারেন। উল্লেখ্য, জন্মগত সমস্যা রয়েছে ওই বাঘিনীর। তার পিছনের পা দুটির উল্টোদিকে ভাঁজ হয়। তাছাড়া কোমরের নিচের অংশ আগের থেকে অনেকটাই দুর্বল হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তার চিকিৎসার জন্য প্রথমে কড়া ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি উলটে হাঁটুর নিচের অংশে ক্ষয় ধরা পড়েছিল। এই অবস্থায় শাবক প্রসব করার পরেই আরও দুর্বল হয়ে পড়ে কিক্কা।
জানা গিয়েছে, যত্ন না পেয়ে তার প্রথম শাবক মারা যায়। এতটাই দুর্বল যে উঠে দাঁড়াতে গিয়ে দ্বিতীয় শাবকের উপর পড়ে গিয়েছিল। তাতে দ্বিতীয় শাবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল। এই অবস্থায় বাঘিনীর যত্ন নিতে চাইছে বনদফতর। সেই কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য আলিপুর চিড়িয়াখানার চিকিৎসালয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কিক্কাকে। বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সেখানে যাওয়ার পরে সিদ্ধান্ত হবে। এর পাশাপাশি আরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাঘ, ভাল্লুক অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের যেসমস্ত এনক্লোজার রয়েছে সেখানে সিসিটিভি বসানো হবে।
প্রসঙ্গত, বাঘের চিকিৎসার জন্য রাজ্যে আরও একটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চালু হতে চলেছে। ঝড়খালিতে এই হাসপাতাল গড়ে তোলা হচ্ছে। বহু বাঘ চিকিৎসার অভাবে মারা যায়। অথচ চিকিৎসা পেলেই বাঘগুলি সুস্থ হয়ে উঠতে পারে। তাই ঝড়খালি ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে এই হাসপাতাল ভবন তৈরি করা হয়েছে। চিকিৎসার জন্য সেখানে আধুনিক সরঞ্জাম নিয়ে আসা হবে। তাছাড়া অনেক সময় পাচারকারীরা ফাঁদ পাতে। তাতে অনেক বাঘ আহত হয়। এই হাসপাতালে নিয়ে এলে সেইসব বাঘের চিকিৎসা মিলবে।