মনুয়া কাণ্ডের কথা নিশ্চয়ই অনেকের মনে আছে। যে প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাঁধতে চেয়ে স্বামীকে খুন করে দেহ পাচার করে দিতে চেয়েছিল। এমনই আরও একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এলো আবার। তাও আবার দুর্গাপুজোর মধ্যেই ঘটল এমন নির্মম খুনের ঘটনা। তবে ঘটনাস্থল কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকা। প্রেমিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্বামীকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিল স্ত্রী। তবে পুলিশের জেরায় নিজের খুনের অপরাধ স্বীকারও করেছে স্ত্রী।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১৩ অক্টোবর মহা অষ্টমীর রাতে খুনের ঘটনাটি ঘটেছে। স্ত্রী মুসলিমা বিবি লেদার কমপ্লেক্স থানা স্বামী আনসার আলি গাজিকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে প্রথমে সংজ্ঞাহীন করে দেয়। তারপর ওই অবস্থাতেই তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। এই কাজে হাত লাগিয়েছিল প্রেমিকও। কিন্তু পুলিশের জেরায় সব কথা স্বীকার করে স্ত্রী মুসলিমা। তবে এই ঘটনার পর প্রেমিক পলাতক। মুসলিমা ধরে পড়েছে বুঝতে পেরেই ফেরার হয়েছে সে।
ঠিক কী ঘটেছে? পুলিশকে দেওয়া মুসলিমার বয়ান অনুযায়ী, তার সঙ্গে স্বামীর মনের মিল ছিল না। তাই অশান্তি লেগেই থাকত। আর সেখানে প্রেমিকের কাছে মিলেছিল ভালোবাসা। যুবকটি ওই এলাকারই বাসিন্দা হওযায় সুবিধা হয়েছিল পরকীয়ায়। তাই প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে নতুন করে সংসার পাতার স্বপ্ন দেখেছিল মুসলিমা বিবি। তাই স্বামীকে খুন করে সরিয়ে দেওয়া হল।
কিভাবে খুনের ছক সাজানো হয়েছিল? জানা গিয়েছে, মুসলিমার ছেলে এবং পুত্রবধূও রয়েছে। মহা অষ্টমীর রাতে স্বামী, ছেলে ও পুত্রবধূকে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে দেয় মুসলিমা। আর ঘুমিয়ে পড়লে প্রেমিক বাড়িতে আসে। তারপর দু’জন মিলে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে আনসার আলি গাজিকে খুন করে। এরপর ওষুধের ঘোর কাটে ছেলে ও পুত্রবধূর। তাঁরা বাবাকে এভাবে পড়ে থাকতে দেখে হাসপাতালে নিয়ে যান ছেলে। সেখানেই চিকিৎসকরা আনসারকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
অভিনয় তারপরও চলে। স্বামীর এই খবরে কেঁদে ভাসায় স্ত্রী মুসলিমা। ছেলের সন্দেহ হওয়ায় সে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। আর রিপোর্টে দেখা যায়, শ্বাসরোধ করেই খুন করা হয়েছে আনসার আলিকে। তখনই তদন্তে নেমে মৃতের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। দফায় দফায় জেরায় ভেঙে পড়ে মুসলিমা বিবি। নিজের অপরাধ স্বীকার করে। তখন গ্রেফতার করে পুলিশ।