কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত থাকার জন্য কি শাস্তির খাঁড়া নামবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরেও? দিলীপ ঘোষের সঙ্গে একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কারণে তৃণমূল বিধায়ক সমরেশ দাসের বিরুদ্ধে দলের কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে কটাক্ষ করে এই প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি।
গত শুক্রবার স্থানীয় বার্ষিক মেলার উদ্বোধনে বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষের সঙ্গে একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন এগরার তৃণমূল বিধায়ক সমরেশ দাস ও দলের ব্লক সভাপতি সিদ্ধেশ্বর বেরা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একই মঞ্চ থেকে তিনজনই ভাষণ দেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধেশ্বর বেরাকে তাঁর পদ থেকে সরানো হয় এবং সমরেশ দাসকে শো-কজ করে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
ঘটনায় শাসকদলের প্রতি কটাক্ষ হেনে এ দিন বিজেপি প্রশ্ন তুলেছে, আগামী ১১ জানুয়ারি কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের ১৫০ তম বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও কি শো-কজ করবে তৃণমূল?
এ দিন বিজেপি রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নেওয়ার পরে নিজের বিরুদ্ধেও কি তিনি একই ব্যবস্থা নেবেন? মেলার উদ্বোধন একটি সামাজিক অনুষ্ঠান। তাতে উদ্যোক্তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। ওটা কোনও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান ছিল না। মমতার মাথা খারাপ হয়েছে। উনি ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে ভয় পেয়েছেন।’
দলের শাস্তিমূলক পদক্ষেপে স্বভাবতই অখুশি সমরেশ দাস জানিয়েছেন, ‘একনায়কোচিত ভঙ্গিতে এমন পদক্ষেপ করা যায় না। এই নিয়ে আলোচনা হওয়ার দরকার ছিল। এখনও পর্যন্ত শো-কজ চিঠি পাইনি। পেলে তার জবাব দেব। এর প্রভাব নির্বাচনের উপর পড়তে পারে।’
সমরেশের যুক্তি, অতীতে বিরোধী নেতাদের সঙ্গে এই মেলায় উপস্থিত থেকেছেন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী।
এ বিষয়ে অবশ্য মন্তব্য করতে চাননি শিশির অধিকারী স্বয়ং। তিনি জানিয়েছেন, ‘শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে সিদ্ধেশ্বর বেরাকে তাঁর পদ থেকে সরিয়েছি। সিদ্ধান্তটি জেলা স্তরে নেওয়া হয়নি। বিধায়ককে চিঠি পাঠানোর বিষয়ে আমার কোনও ভূমিকা নেই।’
ঘটনার জেরে শাস্তিপ্রাপ্ত দুই তৃণমূল নেতার এবার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে যথারীতি জল্পনা শুরু হয়েছে।