একই আসনে জয়ী দুই প্রার্থী। একজন তৃণমূল। অন্য জন জোড়া ফুলের টিকিট না পেয়ে নির্দল হয়ে দাঁড়ানো প্রার্থী। দুজনের কাছেই রয়েছে এপিআরও স্বাক্ষর করা জয়ের শংসাপত্র। নন্দীগ্রামের কেন্দামারি গ্রামে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। নির্দল প্রার্থীর দাবি তাঁকে প্রথমে জয়ী হিসাবে ঘোষণা করা হয় হয়। অন্য দিকে তৃণমূল প্রার্থীর দাবি ফল বেরোনোর কয়েকদিন পর তাঁকে ফোন করে জানানো হয় তিনিই জিতেছেন। এ নিয়ে নির্দল প্রার্থী আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন।
নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের কেন্দামারি জালপাই পঞ্চায়েতের ২২ টি আসনে লড়াই হয় মূলত তৃণমূল ও নির্দল প্রার্থীদের মধ্যে। তৃণমূলের প্রাক্তন পদাধিকারীরা টিকিট না পেয়ে ‘নন্দীগ্রাম আঞ্চলিক উন্নয়ন পর্ষদ’-এর ব্যানারে দলের বিরুদ্ধেই প্রার্থী হন। জালপাই পঞ্চায়েতের ২১৭ নম্বর আসনে তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন তাপসী দোলই। আবার ‘নন্দীগ্রাম আঞ্চলিক উন্নয়ন পর্ষদ’-এর সর্মথন নিয়ে নির্দল প্রার্থী হিসাবে ভোট দাঁড়ান রীতা বল্লভ।
নির্দল প্রার্থীর দাবি, ১১ জুলাই ভোট গণনার দিন, তাঁকে ১৮১ ভোটে জয়ী ঘোষণা করে এপিআরও-র সই ও স্ট্যাপ-সহ শংসাপত্র দেওয়া হয়। আবার ফল বেরোনোর সাতদিনের মাথায় তাঁকে ফোন করে জানানো হয় ওই শংসাপত্র ভুল রয়েছে। বিডিও অফিসে তাঁকে দেখা বলা হয়। অন্য দিকে সেই দিনই তৃণমূল প্রার্থী ডেকে, তাঁকে ১৮১ ভোটে জয়ী ঘোষণা করে শংসাপত্র দেওয়া হয়। সেই শংসাপত্রের এপিআরও-র সই এবং স্ট্যাম্প ছিল।
কিন্তু নির্দল প্রার্থী রীতা বল্লভ এই ফল মেনে নিতে নারাজ। তাঁর প্রশ্ন, জয়ী ঘোষণা করে শংসাপত্র দিয়ে দেওয়ার পর কেন আবার সাতদিন বাদে তৃণমূল প্রার্থীকে জয়ের শংসাপত্র দেওয়া হবে? তিনি বলেন, ‘আমি বিডিও অফিস থেকে সই করা সার্টিফিকেট পেয়েছি। সেখানে কী ভাবে তাপসী দোলই পরে সার্টিফিকেট পায়। আমি আইনের পথে এর উত্তর জানতে চাইব।’
কেন্দামারি জলপাই পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থী তাপসী দোলই বলেন, ‘আমার এজেন্ট এসে আমাকে বলে আমি হেরে গিয়েছি। কিন্তু আমি সাইট থেকে দেখেছিলাম আমি জিতেছি ১৮১ ভোটে। আমাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছিল চক্রান্ত করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমি শংসাপত্র পেয়েছি।’
এ নিয়ে অভিযোগ জানাতে বিডিও অফিসে যান নির্দল প্রার্থী। কিন্তু দেখা পাননি। ইমেলের মাধ্যমে বিডিও এবং রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন রীতা।
নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ বলেন, ‘ফর্ম ২১ তথ্যই নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে ওঠে। কিন্তু কী করে একজন হেরে যাওয়া প্রার্থীকে জয়ের শংসাপত্র দেওয়া হল তা তদন্ত করে দেখা উচিত।’
বিডিও জানিয়েছেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা অবিলম্বে তদন্ত করে পদক্ষেপ করব।’