ঘাটালের এক মহিলা নিজেকে ‘মনসা দেবী’ দাবি করে সোজা চড়ে বসলেন বটগাছের মগডালে। তাঁকে গাছ থেকে নামাতে হিমশিম খেতে হল পুলিশ প্রশাসনকে। বুধবার এই ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের আনন্দগড়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলার শ্বশুরবাড়ি কেশাপাঠ এলাকায়। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে আনন্দগড়ে নিজের দিদির বাড়িতেই থাকছিলেন তিনি। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন। ঘটনার সময় দিদির বাড়িতে পুজো দিচ্ছিলেন ওই মহিলা। আচমকাই নিজেকে ‘ভগবান’ দাবি করে চিৎকার করতে শুরু করেন তিনি। তারপর বাড়ির পাশের একটি বট গাছের মগডালে উঠে পড়েন। তাঁর এই কাণ্ড দেখে হতবাক হয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা অনেকক্ষণ ধরে অনুরোধ করলেও গাছ থেকে নামানো যায়নি ওই মহিলাকে। বাধ্য হয়েই দাসপুর থানায় খবর দেন প্রতিবেশীরা। এদিকে ওই মহিলাকে দেখতে আশেপাশের গ্রামের মানুষরা ঘটনাস্থলে জটলা করেন।
দাসপুর থানার ওসি অমিত মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। খবর দেওয়া হয় দমকলকেও। প্রশাসন গিয়ে দেখে গাছেন নীচ থেকে হাইটেনশনের তার গিয়েছে। বিদ্যুৎ দফতরে খবর দেওয়া হলে, ঘটনাস্থলে এসে ওই এলাকার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করেন বিদ্যুৎকর্মীরা।
ততক্ষণে ওই মহিলা গাছের ডালে বসে চিৎকার করতে শুরু করেন। হাত পা ছুঁড়ে অঙ্গভঙ্গি করতে থাকেন। তারপর দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। দমকল ও পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় ওই মহিলাকে গাছ থেকে নামানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনওভাবেই ওই মহিলা গাছ থেকে নামতে রাজি হননি। তিনি নিজেকে মনসা দাবি করে উদ্ধারকারী দলের উপর সাপের ফনার মতো হাত পাকিয়ে পাল্টা আক্রমণ করেন। দুপুর ২টে নাগাদ দমকলের কর্মীরা ওই মহিলাকে বুঝিয়ে কোনওমতে দড়ি দিয়ে বেঁধে অক্ষত অবস্থায় গাছ থেকে নামান। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে চলে ওই কাজ। তারপর তাঁকে দাসপুর পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত মহিলা অফিসারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ওই মহিলার পরিবারকে আরতিদেবীর উপরে নজরে রাখার পরামর্শ দেয় পুলিশ। এর পর সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাঁর চিকিৎসাও করানো হয়। এদিনের এই ঘটনায় প্রশাসনিক আধিকারিকদের তৎপরতাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা।