করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, এই গুজবের জেরে বাড়ি থেকে বেরোতে পারছিলেন না তিনি। এমনকী মায়ের সঙ্গেও তাঁকে দেখা করতে দিচ্ছিলেন না গ্রামবাসীরা। অবসাদে আত্মঘাতী হলেন তরুণ। রবিবার বিকেলে নিজের ঘরেই তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার পর গুজবের জন্য একে অপরকে দুষতে লেগেছেন গ্রামবাসীরা।
ঘটনা উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা থানা এলাকার কেমিয়া গ্রামের। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাকেশ ঘোষ (২৫) নামে ওই যুবক কলকাতায় কাজ করতেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের জেরে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ১৪ দিন আগে বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। এর পর তাঁর কাশি শুরু হয়। এতেই গ্রামে রটে যায় করোনায় আক্রান্ত তিনি। গ্রামবাসীরা তাঁকে ঘরবন্দি করেন। ১৪ দিন ধরে অষ্টপ্রহর সেই ঘরেই কেটেছে রাকেশের। অভিযোগ, তাঁকে মায়ের সঙ্গেও দেখা করতে দিতেন না গ্রামবাসীরা।
খবর পেয়ে তাঁর বাড়িতে আসেন আশা কর্মীরা। লক্ষণ পরীক্ষা করে তাঁরা জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন তিনি। তাতেও গুজব থামেনি। এর পর ওই যুবককে স্থানীয় চাঁদপাড়া হাসপাতালে নিয়ে যান পরিজনরা। চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানান, তাঁর ব্লাড সুগার ও ব্রঙ্কাইটিসের সমস্যা রয়েছে। কিন্তু তাতেও গ্রামবাসীদের সন্দেহ কাটেনি।
লাগাতার বন্দি থেকে অবসাদে ভুগতে থাকেন রাকেশ। রবিবার সন্ধ্যায় নিজের ঘরেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন তিনি। স্থানীয় পঞ্চায়েতের তরফে গুজবের খবর মেনে নেওয়া হয়েছে। গুজবের কথা স্বীকার করেছেন গ্রামবাসীরাও। তবে তার জেরে এই চরম পরিণতি মেনে নিতে পারছেন না কেউ।
করোনাভাইরাসের জেরে দেশের অর্থনীতি তলানিতে পৌঁছনোয় রবিবার বিকেলেই জার্মান অর্থমন্ত্রীর আত্মঘাতী হওয়ার খবর মেলে। গৃহবন্দি দশায় অবসাদের শিকার হয়ে মানুষ চরম পথ বেছে নেওয়ায় শঙ্কিত মনোবিদরা।