বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > East-West Metro: গঙ্গার তলা দিয়ে মেট্রোর সুড়ঙ্গে মাত্র ৪৫ সেকেন্ড! চলে আসবেন হাওড়া থেকে কলকাতা

East-West Metro: গঙ্গার তলা দিয়ে মেট্রোর সুড়ঙ্গে মাত্র ৪৫ সেকেন্ড! চলে আসবেন হাওড়া থেকে কলকাতা

ছবি সূত্র(এডিটেড): পিটিআই (PTI)

চোখের নিমেষে গঙ্গার তলা দিয়ে ৫২০ মিটার পথ পার হয়ে যাবে মেট্রো রেল। এর মাধ্যমে এক মেট্রোতে চড়েই পূর্বে সল্টলেক সেক্টর V-এর আইটি হাব পর্যন্ত পৌঁছে যাবেন যাত্রীরা। অর্থাত্, শহরতলি থেকে হাওড়ায় ট্রেনে করে আসা যাত্রীদের অনেকেই এবার বাঁদুড়ঝোলা হয়ে বাসে যাতায়াত থেকে মুক্তি পাবেন।

KOLKATA : মাত্র ৪৫ সেকেন্ড। তার মধ্যেই সুড়ঙ্গ দিয়ে পার হয়ে যাবেন হুগলি নদী। সৌজন্যে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো করিডরের সুড়ঙ্গ। দেশের প্রথম জলের তলদেশের মেট্রো সুড়ঙ্গ এটি। খুব শীঘ্রই এই অভাবনীয় বিষয়টিই জলভাত হয়ে যাবে নিত্যযাত্রীদের কাছে। চোখের নিমেষে গঙ্গার তলা দিয়ে ৫২০ মিটার পথ পার হয়ে যাবে মেট্রো রেল। এর জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ১২০ কোটি টাকা।

এ যেন ইউরোস্টারের লন্ডন-প্যারিস করিডোরের ভারতীয় ভার্সান। নদীর তলদেশ থেকে প্রায় ১৩ মিটার নিচে দিয়ে গিয়েছে এই সুড়ঙ্গ। ভূমি স্তর থেকে প্রায় ৩৩ মিটার নিচে।

৫২০ মিটার লম্বা এই টানেলটি কলকাতার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো করিডোরের অন্যতম প্রধান অংশ। এর মাধ্যমে এক মেট্রোতে চড়েই পূর্বে সল্টলেক সেক্টর V-এর আইটি হাব পর্যন্ত পৌঁছে যাবেন যাত্রীরা। অর্থাত্, শহরতলি থেকে হাওড়ায় ট্রেনে করে আসা যাত্রীদের অনেকেই এবার বাঁদুড়ঝোলা হয়ে বাসে যাতায়াত থেকে মুক্তি পাবেন। আরও পড়ুন: জানুয়ারি আরও সকাল থেকে পাবেন মেট্রো! কতক্ষণ চলবে? পরিষেবা ইস্ট-ওয়েস্ট করিডরেও

আরও উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এর ফলে হাওড়া ও শিয়ালদহ জুড়ে যাচ্ছে। তাই হাওড়া থেকে শিয়ালদহ বা উল্টো পথে যাতায়াতের জন্য আর বাসের ঝক্কি থাকবে না। স্টেশন থেকেই সরাসরি মেট্রোতে গিয়ে বসলেই হবে। বাসে জ্যাম রাস্তায় যেটা ঘন্টা দেড়েক লেগে যায়, সেই পথই মাত্র ৪০ মিনিটে পাড়ি দেবেন যাত্রীরা।

আপাতত সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ সম্পূর্ণ। এখন খালি এসপ্ল্যানেড এবং শিয়ালদহের মধ্যের ২.৫ কিলোমিটার পথ জুড়ে যাওয়ার অপেক্ষা। সেটি হয়ে গেলেই কাজ শেষ। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকেই লাইন চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশনের জেনারেল ম্যানেজার (সিভিল) শৈলেশ কুমার জানালেন, 'পূর্ব-পশ্চিম করিডোরের ক্ষেত্রে এই টানেল অপরিহার্য এবং গুরুত্বপূর্ণ। এই রুটে লোকবসতি এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত সমস্যা ছিল। ফলে নদীন নিচ দিয়ে টানেল করে লাইন আনাটাই ছিল একমাত্র উপায়।'

একের পর এক সমস্যার কারণে বারবার পিছিয়েছে মেট্রো রেলের এই অংশের কাজ। নানা কারণে বেড়েছে ব্যায়ও। ২০০৯ সালে এই প্রকল্পের জন্য ৪,৮৭৫ কোটি টাকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়ে ২০১৫ সালের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে পরিকল্পনা করা হয়।

তবে খরচ এখন বেড়ে ৮,৪৭৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৮,৩৮৩ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই ব্যয় করা হয়েছে।

টানেলের অভ্যন্তরীণ ব্যাস ৫.৫৫ মিটার। বাহ্যিক ব্যাস ৬.১ মিটার। আপ এবং ডাউন টানেল থাকবে।

টানেলের অভ্যন্তরীণ দেয়াল অতি উচ্চ-মানের M50 গ্রেড, ২৭৫ mm পুরু শক্তিশালী কংক্রিট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। মোট ছয়টি অংশ মিলিয়ে টানেলের বৃত্তাকার গঠন তৈরি করা হয়েছে।

এই অংশগুলি কোরিয়া থেকে আমদানি করা বিশেষ ছাঁচের মাধ্যমে ঢালাই করা হয়েছে। টানেলে জল প্রবেশ এবং কোনও রকম ছিদ্র প্রতিরোধের জন্যও বেশ কিছু সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা রয়েছে। ন্যাশনাল ফায়ার প্রোটেকশন অ্যাসোসিয়েশনের (NFPA) সুপারিশ মেনে টানেলের ভিতরে ৭৬০ মিটার পর্যন্ত লম্বা এমার্জেন্সি ইভ্যাকুয়েশন শ্যাফ্ট বসানো হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য পশ্চিমে হাওড়া স্টেশন এবং পূর্বে স্ট্র্যান্ড রোডে এই ইভাকুয়েশন শ্যাফটের বাইরের অংশ রয়েছে।

ফ্লাই অ্যাশ এবং মাইক্রো সিলিকা দিয়ে গঠিত বিশেষ কংক্রিট মিশ্রণ দিয়ে এই ঢালাই করা হয়। এর ফলে এগুলি জলে ক্ষতি কম হবে।

এরপর এই অংশগুলি এক জটিল গ্রাউটিং পদ্ধতির মাধ্যমে সিল করা হয়েছে। জল, সিমেন্ট, বেন্টোনাইট এবং সোডিয়াম সিলিকেট দিয়ে তৈরি এক মিশ্রণ ব্যবহার করে সংযুক্তিকরণ করা হয়েছে।

লাইনার অংশগুলিতে জার্মানিতে তৈরি নিওপ্রিন এবং হাইড্রোফিলিক অক্সিলিয়ারি গ্যাসকেট লাগানো রয়েছে। এগুলি জলের সংস্পর্শে এলে প্রসারিত হয়ে যায়। তার ফলে জল প্রবেশ করতে পারবে না। আরও পড়ুন: মার্চেই গঙ্গার নীচে ট্রায়াল রান, কবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পুরো অংশে পরিষেবা শুরু?

টানেল তৈরির প্রক্রিয়ায় দুইটি জার্মান টানেল বোরিং মেশিন ব্যবহার করা হয়। নাম প্রেরণা এবং রচনা।

বন্ধ করুন