পুরুলিয়ার বলমারপুর বনাঞ্চলের বেড়ষা বিটের এক গ্রামে ঘটে গেল হাড়হিম করা কাণ্ড। সেখানে সেখানে এক দাঁতালের তাণ্ডবে বহু আগেই ত্রস্ত ছিলেন গ্রামবাসীরা। এরপর কয়েকদিন গ্রামের আশপাশে তার দেখা না মেলায়, অনেকেই ভেবেছিলেন যে, হাতি বোধ হয় গা ঢাকা দিয়েছে। এরপর অযোধ্যার জঙ্গল থেকে সোজা বেরিয়েই তাণ্ডব শুরু করে মত্ত দাঁতালটি। পিষে মেরে দেয় এক কৃষককে।
মেঘলা আবহাওয়া দেখে রাতে বৃষ্টি হতে পারে ভেবেছিলেন কৃষক। এরফলে রাতে ধানের ক্ষতি যাতে না হয়, তার জন্য ত্রিপল দিয়ে তা ঢেকে রাখেছিলেন তিনি। এমন সময় অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসে প্রকাণ্ড সেই প্রাণী। দাঁতাল হাতি ততক্ষণে খামারবাড়ির ধানের গন্ধে মত্ত। মুহূর্তে পায়ের তলায় পিষে ওই কৃষককে মেরে ফেলে সে। এদিকে, এলাকায় হাতি বেরিয়েছে খবর ছড়াতেই , শীতের রাতে দরজা এঁটে থাকেন ত্রস্ত গ্রামবাসীরা। এরপর হাতি বেরিয়ে যেতে সকলে বের হন। তখন দেখা যায়, অচৈতন্য অবস্থায় ওই কৃষক পড়ে রয়েছেন। মুহূর্তে হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিকে, ঘটনার খবর পৌঁছয় পুলিশের কাছে। তড়িঘড়ি এলাকায় আসেন বনদফতর ও পুলিশের কর্তারা। বলরামপুর রেঞ্জার সুবিনয় পাণ্ডাকে নিয়ে এরপর ওই মত্ত হাতিকে জঙ্গলের দিকে পাঠানো হয়। তাঁদের সঙ্গে তখন ছিল হুলা পার্টিও। জানা গিয়েছে, এই দাঁতাল হাতিটি বর্তমানে বেড়ষা পাহাড় এলাকায় রয়েছে।
এদিকে, এই হাতিটি জঙ্গলের দিকে ফিরে গেলেও, বলরামপুর বিটের ইছাডির জঙ্গলে থাকা হাতিটি ঝাড়খন্ডের জঙ্গল থেকে ফের একবার বেড়ষার দিকে আসছে বলে খবর। ফলে দুই হাতির তাণ্ডবে শীতের রাতে এই পাহাড়তলির গ্রামগুলি কার্যত আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। আপাতত বনবিভাগের তরপে জানানো হয়েছে, দলছুটি হাতি যাতে লোকালয়ে না আসে, তার জন্য সব দিক দিয়ে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বনদফতরের সূত্রের খবর, ধানের গন্ধ পেয়ে লোকালয়ে হাতি চলে আসছে। যা রুখতে আপাতত সার্বিক তৎপরতায় প্রশাসন।