লাগাতার বৃষ্টিতে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি ঘিরে বাড়ছে আশঙ্কা। বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গেই ডিভিসি, মাইথন-পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে। সকাল ১১টা পর্যন্ত শুধুমাত্র মাইথন জলাধার থেকেই ১ লক্ষ ৭০ হাজার জল ছাড়া হয়েছে বলে খবর। এদিকে, বন্যা পরিস্থিতি ঘিরে আশঙ্কা বাড়তেই নবান্নে শুরু হয়ে গিয়েছে তৎপরতা। বন্যা পরিস্থিতি ঘিরে নবান্নের ফোকাসে রয়েছে ১০ জেলা। এই ১০ জেলায় ১০ শীর্ষ স্থানীয় আধিকারিকদের পাঠাচ্ছে নবান্ন।
দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলাশাসকদের প্রস্তুত থাকার বার্তা আগেই দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে, মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছেন। তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০ জন সচিব পর্যায়ের শীর্ষ আধিকারিকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, ১০ জেলার বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সেখানে যাচ্ছেন ১০ জন আধিকারিক। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,'দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। নিচু এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরানোর কথা বলা হয়েছে।' তিনি জানান হাওড়ার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন এমএসএমই সচিব রাজেশ পান্ডে, বীরভূম দেখবেন রাজেশ সিনহা, পশ্চিম মেদিনীপুরের অবস্থা দেখবেন জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি বিভাগের সুরেন্দ্র গুপ্তা। হুগলির দায়িত্বে কৃষি দফতেরর ওঙ্কার সিং মিনা, পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্বে খাদ্য দফতরের পরভেদ সিদ্দিকি, পরিবহনের সৌমিত্র মোহন থাকছেন ঝাড়গ্রামের দায়িত্বে, পশ্চিম বর্ধমানের দায়িত্বে অনগ্রসর শ্রেণির কল্যাণ দফতরের সঞ্জয় বনসল, শ্রম সচিব অবনীন্দ্র সিং থাকছেন বাঁকুড়ার দায়িত্বে, পুরুলিয়ার দায়িত্বে শিল্প দফতরের পি মোহন গান্ধী, পূর্ব বর্ধমানের দায়িত্বে থাকছেন পঞ্চায়েত দফতরের পি উলগানাথন।
মাইথন এবং পাঞ্চেত থেকে প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়ার ফলে দুর্গাপুর ব্যারাজে তা ভয়ানক রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা। ইতিমধ্যেই বিগত কয়েকদিনের বৃষ্টির জেরে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ব্যাপক পরিমাণে জল ছাড়া হয়। এর জেরে দামোদর নিম্ন অববাহিকায় প্লাবনের আশঙ্কা জোরালো হতে শুরু করেছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে আসানসোল, দপর্গাপুর সহ একাধিক জায়গায় এলাকায় রাস্তাঘাট জলমগ্ন হয়েছে। এদিকে, সামনেই দুর্গাপুজো। তার আগে এই পরিস্থিতি ঘিরে বেশ আশঙ্কা বাড়ছে। অন্যদিকে, দামোদরের ভয়াল রূপ কৃষি জমি ঘিরে আশঙ্কা বাড়াচ্ছে।