ভোটের আগে সন্দেশখালি ইস্যুতে বার বার সুর চড়িয়েছে বিজেপি। সেই সন্দেশখালির বধূ রেখা পাত্রকেই প্রার্থী করেছিল বিজেপি। কিন্তু সন্দেশখালি গেরুয়া শিবিরকে বড় কোনও আশার কথা শোনাতে পারেনি। বসিরহাট কেন্দ্রে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে তৃণমূল।
ভোট মিটেছে। কিন্তু কেমন আছে সন্দেশখালি?
ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই কেমন যেন থমকে গিয়েছে সন্দেশখালির বিভিন্ন এলাকা। কার্যত এই কেন্দ্রকে ঘিরে স্বপ্ন বুনেছিল বিজেপি। খোদ নরেন্দ্র মোদী এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার।
ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই কার্যত আরও যেন থমথমে হয়ে গিয়েছে গোটা এলাকা। ধামাখালি আর সন্দেশখালির মধ্য়ে ফেরি চলাচল হচ্ছে আগের মতোই। কিন্তু কোথাও যেন ছন্দ কেটে গিয়েছে। ঘাট থেকে নামার পরে একাধিক টোটোর দেখা নেই। টোটো চালকদের একাংশ গন্ডগোলের আশঙ্কায় আর বের হচ্ছেন না। এদিকে বহু পরিবার যারা আগে তৃণমূল করতেন কিন্তু পরে শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমে তারা বিজেপিমুখী হয়েছিলেন তারাও আতঙ্কের প্রহর গুনছেন। এই পরিস্থিতিতে ফের যদি তাদের উপর বদলা নিতে চায় শাসকদল সেই আশঙ্কায় তাদের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে।
অত্যাচারের প্রসঙ্গও তুলতে আর ভরসা পাচ্ছেন না বাসিন্দারা।ভোটের পরেও যে মহিলারা রাস্তায় বেরিয়ে এসে তৃণমূলের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন তারাও আজ বিভ্রান্ত।
এমনকী একাধিক বিজেপি সমর্থন এলাকায় আসতে আর সাহস পাচ্ছেন না। আর যারা আছেন তারাও নীরব। তবে অত্যাচার নেমে এলে যে পালটা প্রতিরোধ হবে সেটাও জানিয়ে দিয়েছেন তারা। তাছাড়া সন্দেশখালি বিধানসভা এলাকায় রেখার ভালো ফলাফল হয়েছে। কিন্তু গোটা বসিরহাটে তারা ভালো ফলাফল করতে পারেনি।
এদিকে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের লোকজন তাদের হুমকি দিচ্ছে। তবে তৃণমূল অবশ্য় এসব মানতে নারাজ। তাদের দাবি, মাইকে বলে দেওয়া হয়েছে যাতে কোনও অশান্তি না হয়। এলাকায় শান্তিরক্ষার কাজ আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।
এদিকে রেখা পাত্রের নাম প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই তিনি বসিরহাটে থাকা শুরু করেন। কলোনিপাড়ায় সেই একচিলতে ঘরে তিনি আর থাকতেন না। কিন্তু পরাজিত হওয়ার পরে তাঁকে ফের হয়তো ফিরে যেতে হবে সেই টিনের চালার ছোট্ট ঘরে। স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা বুকে নিয়ে দিন গুনছে সন্দেশখালি।