এটিএম জালিয়াতির ধরন দেখে আগাগোড়াই গোয়েন্দাদের সন্দেহ হয়েছিল, এই অপরাধের জাল এ রাজ্যে বোনা হয়নি। হলও তাই। ফরিদাবাদ থেকে গ্রেফতার করা হল ভিনদেশী জালিয়াতকে।
কলকাতার বুকে পর পর হওয়া এটিএমে অভিনব কায়দায় টাকা উধাওয়ের ঘটনায় ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। তদন্তকারী আধিকারিকরা গোপন সূত্রে খবর পান যে, এই ধরনের একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানায়। সেই সূত্র ধরে দু’টি দলে বিভক্ত হয়ে গাজিয়াবাদ ও ফরিদাবাদে পাড়ি দেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। সেখানে পৌঁছতেই মিলল সাফল্য। ফরিদাবাদ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে উজবেকিস্তানের এক নাগরিককে।
কয়েকদিন ধরেই গোয়েন্দাদের ভাষায় ‘ম্যান ইন দ্য মিডিল অ্যাটাক’ (এমআইটিএমএ)পদ্ধতিতে এটিএম জালিয়াতির ঘটনা দেখা গিয়েছে শহরে। এটিএম না ভেঙেই খোয়া গিয়েছে লাখ লাখ টাকা। শহরের তিন প্রান্ত থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে।
তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, নতুন এক ধরনের ‘ট্রান্সমিটারের’ সাহায্যে এই জালিয়াতি করা হয়েছে। সেকারণে টাকা চুরির সময় ব্যাঙ্কের সঙ্গে এটিএমের সংযোগ বিছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। গোয়েন্দা প্রধান মুরলিধর শর্মা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, এই টাকা কোনও গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়নি। যা ক্ষতি হয়েছে সব এটিএমে টাকা ভরার দায়িত্বে থাকা সংস্থার। ঘটনার প্রেক্ষিতে ২৫ ও ২৮ মে তিনটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে।সর্ষের মধ্যেই কোনও ভূত আছে কি না তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। কারণ, এই ধরণের অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে ব্যাঙ্কের কোনও কর্মী জড়িয়ে থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না গোয়েন্দারা। এছাড়াও সন্দেহের তালিকার বাইরে নেই এটিএমে টাকা ভরার দায়িত্বে থাকা সংস্থার কর্মীরা। ওই সব সংস্থায় কে কোথায় কি দায়িত্বে কাজ করছেন, সেই তথ্যও অনুসন্ধান করছেন তদন্তকারীরা।