আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তারপরই বড়দিন। উৎসবের আমেজে গা ভাসাতে চলেছে গোটা বাংলা। তার প্রস্তুতিও চলেছে পুরোদমে। আর শহরবাসীর নিরাপত্তাকে সুনিশ্চিত করতে একেবারে জোরালো উদ্যোগ কলকাতা পুলিশের। তবে গত কয়েকদিন ধরেই কলকাতা চিড়িয়াখানায় প্রচুর ভিড়় হচ্ছিল। এবার বড়দিনে তুমুল ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
করোনার আতঙ্ককে তুড়ি মেরে উড়িয়ে গত রবিবার চিড়িয়াখানায় প্রায় ৮০ হাজার দর্শক এসেছিলেন। অনেকের অনুমান এবার বড়দিনে চিড়িয়াখানায় প্রায় এক লক্ষ মানুষ আসতে পারেন। বাঘ, শিপাঞ্জি দেখার জন্য কার্যত জনপ্লাবন হতে পারে চিড়িয়াখানায়।
ইতিমধ্যেই চিড়িয়াখানার অধিকর্তার সঙ্গে ওয়াটগঞ্জ থানার আধিকারিকরা কথাবার্তা বলেছেন। ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কথাবার্তা হয়েছে। চিড়িয়াখানা সূত্রে খবর, চিড়িয়াখানায় সব মিলিয়ে ৩০টি টিকিট কাউন্টার করা হয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। তবে শুধু চিড়িয়াখানায় নয়, এবার ভিক্টোরিয়া, জাদুঘর,তারামণ্ডলে বিপুল জনপ্লাবনের সম্ভাবনা রয়েছে। এর সঙ্গে ইকো পার্কেও বিপুল ভিড় হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু তবে ইকো পার্ক বিস্তৃত জায়গার উপর গড়ে ওঠায় সেখানে ভিড় সেভাবে গায়ে লাগে না। এটাই স্বস্তির।
তবে এবারে শহরের অন্য়তম আকর্ষণ চিড়িয়াখানার কাছেই আলিপুর জেল মিউজিয়াম। সেক্ষেত্রে সেখানেও এবার বড়দিনে অনেকেই দেখে আসবেন অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের কথা। এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
এদিকে এবার বড়দিনে শহরের নিরাপত্তাকে নিশ্ছিদ্র করতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বড়দিনে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাড়তি ৬ হাজার পুলিশ থাকবে রাস্তায়। ৩ হাজার পুলিশ কর্মী যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকবেন। ১১টি সেক্টরে শহরের প্রাণকেন্দ্র এলাকাকে ভাগ করা হয়েছে। সেখানে পর্যায়ক্রমে নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে। ওয়াচ টাওয়ারের ব্যবস্থা থাকছে শহরে। ওপর থেকে নজর রাখবেন পুলিশ কর্মীরা। প্রচুর সাদা পোশাকের পুলিশ কর্মীও শহরবাসীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। পুলিশের কুইক রেসপন্স টিমও থাকবে শহর কলকাতায়। মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য় থাকছে উইনার্স টিম।
এদিকে পার্ক স্ট্রিট এলাকাতেও নিরাপত্তার যথেষ্ট ব্যবস্থা থাকবে। শনিবার বিকাল থেকেই অতিরিক্ত বাহিনী নামানো হচ্ছে। প্রায় ২২০০অতিরিক্ত পুলিশ রাস্তায় নামানো হচ্ছে। পার্কস্ট্রিটে ১১টি ওয়াচ টাওয়ারের ব্যবস্থা থাকবে। ২০টি বাইক পেট্রলিং টিম থাকবে শহর পার্ক স্ট্রিট ও সংলগ্ন এলাকায়।
কলকাতার রাস্তায় অন্তত ৫২টি পিসিআর ভ্যান টহল দেবে। ২৩টি জায়গায় থাকবে নাকা চেকিংয়ের ব্যবস্থা। ১৬টি পুলিশ সহায়তা কেন্দ্রও থাকবে এলাকায়। সব মিলিয়ে এবার বড়দিনে শহরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটা পুলিশের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।