ভারতে সাইবার ক্রাইম বেড়েই চলেছে। গত কয়েক বছরে এই ধরনের অপরাধ যেভাবে বেড়েছে তাতে সাইবার প্রতারকরা বহু মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা লুট করেছে। মানুষকে ঠকানোর জন্য সাইবার প্রতারকরা বিভিন্ন ধরনের পন্থা অবলম্বন করেছে। তবে গত এক বছরে শুধুমাত্র কলকাতায় যেভাবে সাইবার অপরাধের ঘটনা ঘটেছে তা কার্যত হতবাক করে দেওয়ার মতো। কলকাতা পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এক বছরে শহরে সবমিলিয়ে সাইবার প্রতারণা হয়েছে ১০০ কোটি টাকার আর তার মধ্যে মাত্র ১৫ শতাংশ উদ্ধার করতে পেরেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর আপ্তসহায়কের ভেক ধরে প্রতারণা, অভিযুক্ত ‘প্রাক্তন রঞ্জি খেলোয়াড়’!
শনিবার আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সে বছরের শেষ মাসিক ক্রাইম কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত হয়ে এই পরিসংখ্যান জানান কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ কুমার ভার্মা। পুলিশ কমিশনার জানান, মূলত টিকিট বুকিং, ডিজিটাল অ্যারেস্ট, মাদক পাচারের ভয় দেখিয়ে, কেওয়াইসি আপডেট, শেয়ারে বিনিয়োগের টোপ, ওটিপি শেয়ারের মাধ্যমে এই প্রতারণা করা হয়েছে। যায় ফলে কলকাতার বিভিন্ন অংশের বাসিন্দারা এই বিপুল অঙ্কের টাকা হারিয়েছেন। এদিনের কনফারেন্সে সব থানার ওসিরাও উপস্থিত ছিলেন। এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে মনোজ ভার্মা তাদের বার্তা দিতে চেয়েছেন বলে মনে করছে পুলিশ মহলের একাংশ।
এর পাশপাশি এদিন ক্রাইম কনফারেন্সে পুলিশ কমিশনার কলকাতা বেআইনি নির্মাণ, ভুয়ো কল সেন্টার, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ, জাল পাসপোর্ট প্রভৃতি বিষয় তুলে ধরেও বাহিনীকে সতর্ক করেছেন। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বাহিনীকে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। কড়া বার্তা দিয়ে জানিয়েছেন, পুলিশকর্মীরা মদ্যপ অবস্থায় ডিউটি করতে পারবেন না। এ বিষয়ে সব থানাকে সতর্ক করা হয়েছে। একই সঙ্গে, ভালো কাজের জন্য পুলিশ কর্মীদের পুরস্কৃত করার কথাও জানিয়েছেন মনোজ ভার্মা।
প্রসঙ্গত, সাইবার প্রতারণা রুখতে ইতিমধ্যেই কেন্দ্র একাধিক পদক্ষেপ করেছে। দেশজুড়ে সাইবার জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ৬ লক্ষেরও বেশি সিমকার্ড এবং ১ লক্ষের বেশি আইএমইআই নম্বর ব্লক করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সম্প্রতি সংসদে অধিবেশনে এমনই তথ্য জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সেখানে বলা হয়েছিল, দেশ জুড়ে সাইবার প্রতারণার ৯ লক্ষ ৯৪ হাজারের বেশি অভিযোগের ক্ষেত্রে ৩ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।