তিন বছর কেটে গিয়েছে। একশো দিনের কাজ করে টাকা মেলেনি গ্রামের গরিব শ্রমিক মজুরদের। কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়ার কথা এই ১০০ দিনের কাজের টাকা। কিন্ত সেটা দেয়নি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। একশো দিনের কাজ বাবদ যে টাকা মিলেছে সেটা দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এই বকেয়া টাকা না পাওয়ার প্রতিবাদে আজ, শনিবার সল্টলেকের বিজেপি অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন একশো দিনের কাজ করা শ্রমিকরা। তাঁদের অভিযোগ, গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থানের জন্য এই টাকা না পাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন বড় অংশের জবকার্ড হোল্ডাররা। কেন কেন্দ্রীয় সরকার একশো দিনের কাজের টাকা বন্ধ রেখেছে? তুললেন প্রশ্ন।
আজ, শনিবার বাংলার নানা জেলা থেকে ক্ষেতমজুর সংগঠনের শ্রমিকরা জড়ো হন বিজেপি অফিসের সামনে। আর তাতেই চমকে যান উপস্থিত বিজেপি নেতা–কর্মীরা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বেরিয়ে আসেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ তথা মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। আর এই ক্ষেতমজুরদের প্রতিনিধিদলকে বিজেপি অফিসে একটি ডেপুটেশন দেওয়ার সুযোগ করে দেন। একইসঙ্গে বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য সকলের সঙ্গে দেখা করেন এবং এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হবেন বলে তাঁদের জানান। যেখানে এই একশো দিনের কাজের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে বলেই টাকা আটকে আছে বলে এতদিন বলেছিলেন বিজেপি নেতারা।
আরও পড়ুন: বনগাঁয় গ্রেফতার পাঁচ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী, নকল পরিচয়পত্র তৈরি করে প্রবেশ
আসলে রাজ্য সরকার টাকা দিয়ে দিলেও কেন্দ্রীয় সরকার কেন প্রাপ্য দিল না? সেটা নিয়েই জবাব চাইতে এসেছিলেন একশো দিনের কাজ করা শ্রমিকরা। তাঁদের মনে হয়, এটা আসলে তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করার সামিল। তাই শ্রমিকদের অভিযোগ, গত তিন বছর ধরে এই প্রকল্পের টাকা কেন্দ্রীয় সরকার না দেওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন বিভিন্ন জেলার কয়েক লক্ষ শ্রমিক এবং তাঁদের পরিবার। এই প্রকল্পের আওতায় তাঁদের জীবন অনেকটাই নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকার এই মনরেগার টাকা না দেওয়ায় বহু শ্রমিক আজ চরম বিপদের মধ্যে রয়েছেন। এমনকী খাবারের টাকাও জোগাড় করতে পারছেন না তাঁরা।
এই একশো দিনের কাজের টাকার জন্য বারবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লেখেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু নানা অজুহাতে তাতে সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ। আবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল নয়াদিল্লির রাজপথে। সেখানে হাজির ছিলেন ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরা এবং তাঁদের চিঠি। যখন এতকিছুর পর কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিল না তখন রাজ্য সরকার সেই টাকা দিয়ে দেয়। আজ তারই জবাব চাই গিয়েছিলেন জবকার্ড হোল্ডাররা। বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ দেখানো হয়। তারপর পাঁচজন প্রতিনিধিদের একটি দল বিজেপি অফিসে গিয়ে ডেপুটেশন জমা দেন শমীক ভট্টাচার্যের কাছে। এই বিষয়ে শমীক বলেন, ‘বিক্ষোভকারীরা তাঁদের দাবি নিয়ে নবান্নে যান। এটা কোনও সরকারি দফতর নয়। বিজেপির কার্যালয়।’