গার্ডেনরিচ কাণ্ডের পরে একাধিক কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে কলকাতা পুরসভা। তবে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ শুধু কলকাতাতেই নয়, রাজ্যের অন্যান্য পুরসভা এলাকাগুলিতেও বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন নির্মাণের ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্ট কড়া অবস্থান নিয়েছে। কিন্তু, তা সত্ত্বেও পুর এলাকাগুলিতে গজিয়ে উঠছে বেআইনি নির্মাণ। তাই গার্ডেনরিচের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার বেআইনি নির্মাণ রুখতে আরও তৎপর হল পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। এর জন্য এবার রাজ্যের সমস্ত পুরসভাতে ৫২ পাতার পুস্তিকা পাঠানো হয়েছে দফতরের তরফে। তাতে বেআইনি নির্মাণ রুখতে যাবতীয় পদক্ষেপের তথ্য রয়েছে। সেই পুস্তিকা মতোই ব্যবস্থা নিতে হবে পুরসভাগুলিকে। তা নিয়ে এখন বেশ জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: বেআইনি নির্মাণ নিয়ে দায় ঠেলাঠেলি পূর্ত দফতর-পুরসভার, ভাঙার নির্দেশ হাইকোর্টের
পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বেআইনি নির্মাণ রুখতে কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে তার যাবতীয় বিবরণ উল্লেখ রয়েছে এই পুস্তিকায়। সেক্ষেত্রে বেআইনি নির্মাণ হলে কোন কোন ধারায় পদক্ষেপ করা হবে? কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে? তা বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে সেখানে। এরফলে আধিকারিকদের আর বিভ্রান্ত হতে হবে। পুস্তিকা দেখে তারা বেআইনি নির্মাণ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
কলকাতা এবং হাওড়া পুরসভা ছাড়া বাকি ১২৬টি পুরসভাকে এই পুস্তিকা পাঠানো হয়েছে। পুর মন্ত্রীর ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, বেআইনি নির্মাণ রুখতে গেলে সারা বছর ধরেই নজরদারি চালাতে হবে। পুস্তিকায় উল্লেখ রয়েছে, নতুন বাড়ির ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন ও বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার সময় নকশা বৈধ কিনা তা দেখে নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে বৈধ না হলে যেমন রেজিস্ট্রেশন হবে না তেমনি বিদ্যুৎ সংযোগও দেওয়া হবে না।
এক কথায় এই পুস্তিকাকে গাইড লাইন হিসেবে মনে করেই ব্যবস্থা নিতে হবে। সেবিষয়ে পুরসভা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মূলত কোনওভাবেই যাতে বেআইনি নির্মাণ গজিয়ে না ওঠে তার জন্য এমন পদক্ষেপ পুর দফতরের। উল্লেখ্য, গার্ডেনরিচে বেআইনি নির্মাণ ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল ১৩ জনের। তারপরে বেআইনি নির্মাণে কড়াকড়ি শুরু করে রাজ্য সরকার। কিন্তু, তারপরেও দেখা যায় উত্তর দমদম পুরসভার বিরাটি অঞ্চলে এক নির্মীয়মান বাড়ি ভেঙে পরে এক মহিলার মৃত্যু হয়। এই সমস্ত ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্যই এমন করা পদক্ষেপ পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের।