সম্প্রতি হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচার হয়েছে। তার ওপর অন্ত্রের সমস্যা রয়েছে সদ্যোজাতের। এই অবস্থায় কলকাতার বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে ভর্তি করা হয়েছে সদ্যোজাতকে। তবে সাধারণত সদ্যোজাতর দৈনিক যে পরিমাণ মাতৃ দুগ্ধ প্রয়োজন সেই পরিমাণ মায়ের দুধ পাচ্ছিল না শিশুটি। এই অবস্থায় সদ্যোজাতকে বাঁচাতে এগিয়ে এলেন সম্প্রতি মা হওয়া ১৫ জন মহিলা।
আরও পড়ুন: হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সাজেশন সম্বল করে বাড়িতেই সন্তান প্রসব, দায়ের FIR
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, একজন সদ্যোজাতের ক্ষেত্রে দৈনিক ৩৬০ মিলিমিটার দুধ প্রয়োজন হয়। তবে শিশুর মা অসুস্থ হওয়ায় সদ্যোজাত দৈনিক ১০ থেকে ১৫ মিলিমিটার দুধ পাচ্ছিল। জানা গিয়েছে, শিশুর বাবা ধীরাজ কুমার হলেন রাঁচির বাসিন্দা। তবে তিনি সল্টলেকে একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করেন। বর্তমানে শিশুর বয়স ৬ মাস। রাঁচির একটি হাসপাতালে জন্মে ছিল কার্তিক নামে ওই শিশুপুত্র। তার মায়ের নাম মাধবী কুমারী। তবে জন্মের ১০ থেকে ১২ দিন পরেই সমস্যা শুরু হয়।
প্রথমে চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। পরে বিভিন্ন পরীক্ষা করে জানা যায় আসলে তার হৃদযন্ত্রের সমস্যা রয়েছে। এরপর শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে বাইপাসের ধারের ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েকদিন আগেই তার হৃদযন্ত্রের অস্ত্রোপচার হয়েছে। তবে পরে অন্ত্র এবং রক্তে সংক্রমণ দেখা দেয়। এই অবস্থায় শিশুকে ফের ভেন্টিলেশনে রাখা হয়।
শিশুর বাবা ধীরাজ কুমার জানান, তাঁর ছেলের হৃদযন্ত্রের অস্ত্রোপচার হয়েছে। এখন সে মায়ের দুধ ঠিকমতো পাচ্ছে না। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, একমাত্র মায়ের দুধই তাকে বাঁচাতে পারে। তবে মাতৃদুগ্ধ কম পাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে।
তিনি জানান, সহকর্মীদের মাধ্যমে এবং সোশ্যাল মাধ্যমে মায়ের দুধের জন্য আবেদন করেছেন। সেই বিষয়টি জানতে পেরে ১৫ জন সদ্য মা হওয়া মহিলা এগিয়ে এসেছেন। যার মধ্যে রয়েছেন সোদপুরের এক মহিলা। তিনি জানান, সমাজ মাধ্যমে পোস্ট দেখে বিষয়টি জানতে পারেন। ফোন করে তিনি সাহায্যের কথা জানান। পরে তারা বাড়িতে এসে দুধ সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। তিনি এভাবে বারবার করে সাহায্য করবেন বলে জানিয়েছেন।
খড়দহের এক মহিলাও ধীরাজের সন্তানের অসুস্থতার কথা জানতে পারেন স্তন্যদানে এগিয়ে এসেছেন। যদিও এসএসকেএম হাসপাতালে মাতৃদুগ্ধ ব্যাঙ্ক রয়েছে। তবে এনিয়ে ঠিকমতো প্রচার হয়না বলে অনেকেই বিষয়টি জানেন না। সাধারণত, রুগ্ন নবজাতক যারা মায়ের স্তন্যপান করতে পারছে না ওই ব্যাঙ্ক থেকে তাদের মাতৃদুগ্ধ দেওয়া হয়। তবে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এখন এটিকে বলা হয়, কম্প্রিহেনসিভ ল্যাকটেশনাল ম্যানেজমেন্ট সেন্টার। তবে এর প্রচার দরকার।